এমন মালিকও হওয়া যায়!

ঘটনাটি গল্পের মতো সুন্দর। বস হলে তো এমনই হতে হয়। আর মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক যদি এমন হয়, তাহলে হয়তো বিশ্বব্যাপীই শ্রমিক অসন্তোষের যত গল্প আছে সবই বদলে যেত ভালোবাসার গল্পে।
মালিক হিসেবে একটি দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছেন আমেরিকান ক্রেডিট কার্ড সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রাভেটি পেমেন্টেসর সিইও ড্যান প্রাইস। আর এ কারণেই তাঁকে ‘দ্য বেস্ট বস ইন আমেরিকা’ বলছে দেশটির শীর্ষ গণমাধ্যমগুলো। ড্যানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কম যায় না প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরাও। ভালোবাসার জবাব তারা ভালোবাসা দিয়েই দিয়েছে।
যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বনিম্ন পারিশ্রমিক ঘণ্টায় ৬০ ডলার করে বার্ষিক আয় ১৭ হাজার ডলার। সেখানে গ্রাফিটি পেমেন্টেসর সিইও ড্যান প্রাইস তাঁর প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য সর্বনিম্ন বার্ষিক বেতন ঘোষণা করেন ৭০ হাজার ডলার। আর এ ঘোষণার ফলে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের গল্পটাই বদলে গেছে মুহূর্তে। বিশেষ করে যারা একেবারেই নিচের পদে কাজ করত। যাদের আয় ছিল ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ডলার, সেখানে বেড়ে গেছে দ্বিগুণ।
আর এসব করতে গিয়ে নিজের বেতনটাকেও কমাতে হয়েছে তাঁকে। যেখানে ড্যানের আগে বেতন ছিল এক মিলিয়ন ডলার। সেটা কমিয়ে এনেছেন ৭০ হাজার ডলারে, যা শ্রমিক শোষণের এই বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে।
এ সিদ্ধান্তের কারণে নিজের অনেক শখও বিসর্জন দিতে হয়েছিল মহতী এই সিইওকে। তাঁর অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল, একটি টেসলা কারের। কিন্তু যেহেতু আয় কমে এসেছে, তাই সেটা পূরণ সম্ভব ছিল না।
কিন্তু যে কর্মচারীদের জন্য নিজের শখ বিসর্জন দিলেন, তারা কি চুপচাপ বসে থাকবে? তারাও দিয়েছে ভালোবাসার প্রতিদান। কর্মীরা বসের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নেয়। যেহেতু এটি একটি ব্যয়বহুল বিষয়, তাই তাদের একটু সময় নিতে হয়। কর্মীরা তাদের কয়েক মাসের বেতন জমা করতে শুরু করে। এরপর সেই বেতনের টাকা দিয়ে তারা একটি টেসলা কার কিনে উপহার দেয় বস ড্যান প্রাইসকে। কর্মীরা শুধু চেয়েছিল, ড্যান তাদের যে পরিমাণ ভালোবেসেছেন তার যোগ্য সম্মান তাঁকে জানাতে। আর তাই এমন সিদ্ধান্ত এবং এতে তারা সফল।
নতুন গাড়িটি উপহার পেয়ে ড্যান আবেগে আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠেন। তিনি কর্মীদের ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানান। এসবই একটি প্রতিষ্ঠানের গল্প মাত্র। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানটিই একটি মানবিক ভালোবাসার সমতার সমাজের দৃষ্টান্ত হয়ে রইল। উদাহরণ সৃষ্টি করে দেখাল, এভাবেও সম্ভব!