ইউক্রেনে অবশ্যই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে, পুতিনকে রামাফোসা
কিয়েভ ও মস্কোর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি প্রতিনিধিদলের অংশ হয়ে রাশিয়া সফর করছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। শনিবার (১৭ জুন) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মস্কোর সঙ্গে আলোচনা প্রত্যাখ্যান করার একদিন পর রামাফোসা তার প্রতিনিধিদলের গৃহীত গুচ্ছ নীতি-প্রস্তাবনা পেশ করেন, যা ‘বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন’ বলে মনে করে ক্রেমলিন।
প্রতিনিধিদলটি এমন একটি মহাদেশের কণ্ঠস্বর হয়ে এসেছিল, যা ইউক্রেন সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ করে শস্যের দামবৃদ্ধির কারণে বাজে পরিস্থিতির মোকাবিলা করছে।
সেন্ট পিটার্সবার্গের শহরতলীতে আলোচনার পর দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিল রামাফোসা বলেন, ‘এই যুদ্ধ অবশ্যই আলোচনার মাধ্যমে এবং কূটনৈতিক উপায়ে নিষ্পত্তি করা উচিত।’
রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ অবশ্য ইউক্রেনে তাদের সামরিক অভিযানকে বর্ণনা করার জন্য ‘যুদ্ধ’ শব্দটিকে কার্যকরভাবে নিষিদ্ধ করেছে।
রামাফোসা বলেন, তার প্রতিনিধিদল এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে চান। এই প্রতিনিধিদলে আফ্রিকার সাতটি দেশের নেতা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন।
রামাফোসা ১০টি নীতি তালিকাভুক্ত করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে–সংঘাত নিরসন, দেশের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি, সমস্ত দেশের জন্য নিরাপত্তা গ্যারান্টি, কৃষ্ণ সাগরের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন শস্য রপ্তানি এবং যুদ্ধবন্দি ও শিশুদের তাদের মূল দেশে ফেরত পাঠানো।
এই মিশনে দক্ষিণ আফ্রিকা, সেনেগাল, কমোরোস ও জাম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি উগান্ডা, মিসর এবং কঙ্গো-ব্রাজাভিলের শীর্ষ কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
রাষ্ট্র পরিচালিত বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তি জানায়, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘যেকোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন।’
নেতাদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরে পেসকভ বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন এটি বিবেচনা করার আগ্রহ দেখিয়েছেন।’
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, পরিকল্পনাটি ‘আনুষ্ঠানিকভাবে তৈরি করা হয়নি’।
প্রতিনিধিদলের ‘ভারসাম্যপূর্ণ’ পন্থার প্রশংসা করে পুতিন বলেন, ‘যারা ন্যায়বিচারের নীতির ওপর ভিত্তি করে শান্তি বাস্তবায়ন করতে চায় এবং পক্ষগুলোর ন্যায়সঙ্গত অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তাদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার পথ উন্মুক্ত।’
মস্কো অতীতের পুনরাবৃত্তি করে বলেছে, যেকোনো আলোচনার জন্য ‘নতুন আঞ্চলিক বাস্তবতা’ বিবেচনায় নেওয়া দরকার।
কিয়েভে রামাফোসার সঙ্গে আলোচনায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান জেলেনস্কি। পরে শুক্রবার (১৬ জুন) নিজেদের অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘শান্তি অর্জনের জন্য ইউক্রেনকে অবশ্যই রাশিয়ার কাছে হারানো অঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে হবে।’