ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত দক্ষিণ কোরিয়া, নিহত অন্তত ২৬
দক্ষিণ কোরিয়ায় অতিবর্ষণে সৃষ্ট বন্যার কারণে একটি টানেলে আটকেপড়া গাড়ি থেকে আরও অন্তত সাতটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে এবং ১০ জন নিখোঁজ রয়েছে। খবর বিবিসির।
মুষলধারে বৃষ্টির কারণে দেশটির বেশির ভাগ অংশে বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দুর্যোগ কবলিত অঞ্চল।
এদিকে ৬৮৫ মিটার দীর্ঘ টানেলে কতজন লোক এখনও আটকা পড়ে আছেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে, ১৫টি যানবাহন ডুবে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা জানান, মধ্য-উত্তর চুংচেং প্রদেশের চেওংজু শহরের কাছে ওসোংয়ের টানেলটি আকস্মিক বন্যায় ভেসে গেছে। কাছের একটি নদীর পাড় হঠাৎ ফেটে যাওয়ায় টানেলে খুব দ্রুত পানি ঢুকে পড়ে। এতে চালক ও যাত্রীরা সরে যাওয়ার সুযোগ পাননি।
আজ রোববার (১৬ জুলাই) সকালে একটি বাসের ভেতর থেকে ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এটি শনিবার অন্য একটি মৃতদেহ আবিষ্কার এবং নয়জন জীবিত উদ্ধারের পরে। শনিবার একজনের মরদেহ ও নয়জনকে জীবিত উদ্ধার করে উদ্ধারকর্মীরা।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, এ পর্যন্ত বন্যায় সামগ্রিকভাবে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩। অন্যান্য প্রাণহানির বেশির ভাগই হয়েছে উত্তরের পার্বত্য গিয়ংসাং অঞ্চলে, যেখানে ভূমিধস হয়েছে এবং পুরো বাড়িঘর পানিতে ভেসে গেছে।
শনিবার দক্ষিণ কোরিয়াজুড়ে প্রায় ৩০০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। কোরিয়ান মেটিওরোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুসারে, দেশটি সাধারণত বছরে ১০০০ মিমি থেকে ১৮০০ মিমি বৃষ্টিপাত দেখা যায়। যদিও এর বেশির ভাগই গ্রীষ্মের মাসগুলোতে হয়।
বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় সরকারের জারি করা আদেশের পরেও হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু সেনাবাহিনীকে উদ্ধার তৎপরতায় সাহায্য করতে বলেছেন।
স্থানীয় সময় শনিবার ভোরে উত্তর চুংচেংয়ের গোয়েসান বাঁধে পানি উপচেপড়া শুরু করলে প্রায় ছয় হাজার ৪০০ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় বার্তা সংস্থা জানায়।
শুক্রবার উত্তর চুংচেংয়ে ভূমিধসের কারণে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। এতে একজন প্রকৌশলী আহত হন। তবে ট্রেনটিতে তখন যাত্রী ছিল না।
কোরিয়া আবহাওয়া প্রশাসন আগামী সপ্তাহের বুধবার পর্যন্ত আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি ‘গুরুতর’ বিপদের দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
অতিবৃষ্টির কারণে এশিয়ায় ভারত, চীন ও জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশে গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বন্যা ও ভূমিধস হয়েছে।