ইসরায়েলে বিক্ষোভের মধ্যেই বিচার বিভাগের ক্ষমতা কমানোর বিল পাস
সর্বশেষ কয়েক মাস ধরেই ইসরায়েলে বিক্ষোভ চলছে। বিচার বিভাগকে ঢেলে সাজানোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিল দেশটির জনগণ। এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিল দেশটির প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও। তা সত্ত্বেও ইসরায়েলের পার্লামেন্টে বিতর্কিত বিলটি পাস হয়েছে। আজ সোমবার (২৪ জুলাই) দেশটির ক্ষমতাসীন কট্টর ডানপন্থী সরকার নেসেটে বিচার বিভাগের ক্ষমতা কমানোর বিলটি পাস করে। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, বিরোধী আইন প্রণেতাদের বয়কটের পরও প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার জোটের মিত্ররা নেসেটে বিলটি পাস করেছে। এ সময় বিরোধীরা নেসেটে ‘লজ্জা, লজ্জা’ বলে চিৎকার করেন। ১২০ আসনের নেসেটে বিলটি ৬৪ ভোট পেয়ে পাস হয়।
সমালোচকদের অভিযোগ, বিচার বিভাগের এই পরিবর্তনের ফলে ক্ষমতাসীন সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপকে বাতিল করতে পারবে না আদালত। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। বিচারকরা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গেলেও পার্লামেন্টে তা পরিবর্তন করা যাবে। এতে করে আরও কর্তৃত্ববাদী সরকারের পথ খুলে যাবে।
তবে, ক্ষমতাসীন সরকারের দাবি, নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে বিচার বিভাগের ক্ষমতার ভারসাম্য নেই। ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিতে পরিবর্তন প্রয়োজন।
বিচার বিভাগের পরিবর্তনের জেরে ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘস্থায়ী বিক্ষোভ শুরু হয়। চলতি বছরের শুরুতে নতুন জোট সরকার বিচার বিভাগের পরিবর্তনের বিষয়টি সামনে আনে। এরপর থেকেই দেশটিতে বিক্ষোভ চলমান।
এদিকে, বিলটি পাস হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় ধর্মঘটের হুমকি দিয়েছে শ্রমিক ইউনিয়ন হিস্তাদ্রুত। বিলটি নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। এক বিবৃতিতে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরনন বার-ডেভিড বলেন, ‘সংস্কারের একতরফার গুরুতর পরিণতি হবে। আগামী দিনে, আমি ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশনের প্রধানদের নিয়ে প্রয়োজনে সাধারণ ধর্মঘট দেব।’
এদিকে, যখন নেসেটে বিলটি নিয়ে ভোটাভুটি হচ্ছিল ঠিক তখন পার্লামেন্টের বাইরে বিক্ষোভ করছিল দেশটির জনগণ। ড্রাম ও বাঁশি বাজিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলছিল, লজ্জা, লজ্জা। বিক্ষোভকারী সরাতে জলকামানের ব্যবহার করে পুলিশ। পাশাপাশি বিক্ষোভের মধ্যে কিছু পুলিশকে মোতায়েন করা হয়।
এই ভোটাভুটিটি হয়েছে ৭৩ বছর বয়সী নেতানিয়াহু পার্লামেন্টে আসার ঘণ্টাখানেক পরে। আর মাত্র একদিন আগে অপারেশন হয়েছে তার।
এএফপি বলছে, গতকাল বিলটির ভোট স্থগিত করার জন্য ইসরায়েলি সরকারকে আহ্বান জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, ‘ইসরায়েলের বন্ধুর দৃষ্টিকোণ থেকে মনে হচ্ছে, বিচার বিভাগের সংস্কারের প্রস্তাবটি আরও বিভাজনমূলক হয়ে উঠছে। বিলটি পাসের জন্য ইসরায়েলি নেতাদের তাড়াহুড়ো করার কোন মানে হয় না। তাদের উচিত, জনগণকে একত্রিত করা এবং ঐকমত্য খোঁজার দিকে মনোযোগ দেওয়া।’