‘অভ্যুত্থানের পরিকল্পনার’ অভিযোগে ইরানের আদালতে যুক্তরাষ্ট্রকে জরিমানা
১৯৭৯ সালের শুরুর দিকে ইরানে ইসলামি বিপ্লব ঘটে। ওই সময় দেশটিতে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই সরকারকে ১৯৮০ সালে হটানোর জন্য অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা সাজায় মার্কিন প্রশাসন। সেই অভিযোগে তেহরানের একটি আদালত যুক্তরাষ্ট্রকে ৩৩ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা করেছে। আজ শনিবার (২৬ আগস্ট) দেশটির বিচার বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, ১৯৭৯ সালে বিপ্লবের মাধ্যমে মার্কিন সমর্থিত রেজা শাহকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এর পরের বছরই তৎকালীন নতুন সরকারকে হটাতে চেষ্টা করে সামরিক বাহিনীর বেশ কিছু সদস্য।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা বলছে, ১৯৮০ সালে বিদ্রোহীদের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক বিমান বাহিনীর কমান্ডার সাইদ মাহদিয়ুন। তাদের সদর দপ্তর ছিল নজেহতে, যা পশ্চিম হামেদান প্রদেশের একটি বিমান ঘাঁটি। ওই অভ্যুত্থানের ঘটনায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে অভ্যুত্থানকারীদের তুমুল সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন প্রাণ হারান ও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ইরনা আরও বলছে, অভ্যুত্থানকারীদের মূল লক্ষ্য ছিল সামরিক ঘাঁটিগুলো দখল করা ও বিপ্লবী নেতাদের বাসায় হামলা চালানো। তবে, এতে ব্যর্থ হয় তারা।
১৯৮০ সালের ওই ঘটনায় গত বছর অভ্যুত্থানে নিহতদের স্বজনেরা ইরানের আন্তর্জাতিক আদালতে ক্ষতিপূরণের দাবিতে একটি পিটিশন দাখিল করেছিল। এই অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করা হয় ওই পিটিশনে। আর আদালত বাদীদের পক্ষেই রায় দিয়েছে।
রায়ে তেহরানের আদালত মার্কিন সরকারকে বাদী অভ্যুত্থানে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে তিন কোটি ডলার দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি শাস্তি হিসেবে আরও ৩০ কোটি ডলার জরিমানা করেছে।
এএফপি জানিয়েছে, ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। ১৯৫৩ সালে ব্রিটিশ এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইরানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোসাদ্দেগকে উৎখাতের পরিকল্পনা করেছিল। মোসাদ্দেগ ইরানের তেল শিল্পকে জাতীয়করণ করেছিলেন।
ইরানের বিপুল পরিমাণ অর্থ যুক্তরাষ্ট্র ফ্রিজ করে রেখেছে। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ফ্রিজ করা অর্থ লেবাননের বৈরুতে মার্কিন নৌবাহিনীর ঘাঁটিতে ও সৌদি আরবে বিস্ফোরণে হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়। ১৯৮৩ সালে বৈরুতে ও ১৯৯৬ সালে সৌদিতে বিস্ফোরণের জন্য তেহরানকে দায়ী করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।