রোহিঙ্গাবাহী নৌকা ঠেকাতে সাগরে ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ ও জেলেদের টহল
চলতি মাসে নৌকায় করে ইন্দোনেশিয়ায় গেছে এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা। দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলে নৌকায় করে আসছে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু গোষ্ঠীটির লোকেরা। এবার তাদের ঠেকাতে সমুদ্রে টহল শুরু করেছে ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ ও জেলেরা।
আজ শনিবার (২৫ নভেম্বর) ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ ও জেলের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, মিয়ানমারে চরম নির্যাতনের শিকার মুসলিম রোহিঙ্গারা প্রতি বছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘ এবং ব্যয়বহুল সমুদ্র ভ্রমণ করে। মিয়ানমারে চরম নির্যাতনের শিকার মুসলিম রোহিঙ্গারা প্রতি বছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘ এবং ব্যয়বহুল সমুদ্র ভ্রমণ করে। প্রতিবছর সাধারণত এই সময়টাতে রোহিঙ্গারা সাগর পাড়ি দিয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। তাদের বেশিরভাগই নৌযাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ থেকে।
এই মাসে সামুদ্রিক আবহাওয়া শান্ত ও সহজ হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে অর্ধ ডজনেরও বেশি রোহিঙ্গাবাহী নৌকা আচেহ প্রদেশে পৌঁছেছে। এর মধ্যে কিছু নৌকাকে উপকূলে ভিড়তে দেয়নি স্থানীয়রা।
সাড়ে তিল লাখ লোক অধ্যুষিত পূর্ব আচেহ প্রদেশের পুলিশ বলছে, গত রোববারের পর থেকেই দিনরাত টহল দেওয়া হচ্ছে। ওই দিনে ৩৬ রোহিঙ্গা পৌঁছেছিল। এক বিবৃতিতে পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে উপকূলীয় এলাকায় ও সমুদ্রে নজরদারি বাড়ানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব আচেহ প্রদেশের পুলিশ প্রধান অ্যান্ডি রহমানসাহে বলেন, ‘দিনের ২৪ ঘণ্টায় টহল দেওয়া হচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের ঠেকানো।’
উত্তর আচেহ প্রদেশের তানহো আনোয়ে গ্রামের প্রধান আমিরুদ্দিন ইসমায়েল এএফপিকে বলেন, ‘শুক্রবার রাতে মুয়ারা বাতু শহরের উপকূল থেকে দুই মাইল (তিন কিলোমিটার) দূরে একটি রোহিঙ্গাবাহী নৌকা দেখতে পরিলক্ষিত হয়। এরপর থেকে জেলেরা টহল বাড়িয়েছে। সামরিক বাহিনী, স্থানীয় পুলিশ ও জেলে সবাই টহল দিচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত নৌকা চোখের আড়ালে নাযায় ততক্ষণ পর্যন্ত টহল চলে।’
উত্তর আচেহ প্রদেশের দেওয়ানতারা ডিস্ট্রিক্টের জেলে সম্প্রদায়ের প্রধান নাহারুদ্দিন জেলেদের টহলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা উপকূল বরাবর নজরদারি পরিচালনা করছি। জেলেরা যখন সমুদ্রে গিয়েছিল আমরা তাদের নজর রাখতে অনুরোধ করেছি।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোহিঙ্গাদের ঠেকাতে কঠোর হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া প্রশাসন। এর আগে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারত সীমান্তে কঠোরতা আরোপ করেছিল।
এএফপি জানিয়েছে, ধর্মের কারণে রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে আচেহ প্রদেশের স্থানীয়দের। তবে, স্থানীয় অনেকে অভিযোগ করছেন, তাদের ধৈর্য পরীক্ষা করছে। রোহিঙ্গারা দুর্লভ সম্পদ ব্যবহার করছে ও স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।