কতদিন ভারতে থাকতে পারবেন শেখ হাসিনা?
বিভিন্ন পত্রপত্রিকার প্রতিবেদন অনুসারে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট ছাড়া অন্য কোনো পাসপোর্ট নেই। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যাপক সহিংস বিক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে গিয়ে তিন সপ্তাহ ধরে অবস্থান করছেন তিনি। খবর হিন্দুস্থান টাইমসের।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। আর এ কারণেই ভারতে তার অবস্থান নিয়ে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা-কল্পনা। পাসপোর্ট বাতিলের কারণে ভারতে অবস্থানের বিষয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা, তার সেখানে থাকা নিয়ে ক্ষণ গণনাও শুরু হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের ঘোষণা অনুসারে শেখ হাসিনা, তার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, মন্ত্রিসভার সাবেক সদস্য ও সদ্য বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সদস্যসহ তাদের স্ত্রীদের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে এবং এই সিদ্ধান্ত খুব শিগগিরই কার্যকর হচ্ছে।
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়ার পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন চলতি আগস্ট মাসে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন।
পাসপোর্ট বাতিলের এই সিদ্ধান্ত মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এমন কূটনৈতিক কর্মকর্তাদের জন্যও প্রযোজ্য হচ্ছে। আর দেশের দুটি তদন্ত সংস্থার ছাড়পত্রের পরই কেবল সাধারণ পাসপোর্ট জারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা সরকারি কর্মকর্তাদের সূত্র উল্লেখ করে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শেখ হাসিনার ওই কূটনৈতিক পাসপোর্ট ছাড়া অন্য কোনো পাসপোর্ট নেই।
ভারতের ভিসা নীতি অনুসারে বাংলাদেশের অফিসিয়াল বা কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী ব্যক্তি ভিসা ছাড়াই দেশটিতে প্রবেশ করতে পারেন এবং ৪৫ দিন পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করতে পারেন। সেই হিসাব অনুসারে গতকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) পর্যন্ত শেখ হাসিনা ভারতে ২০ দিন ধরে অবস্থান করছেন। আর এ কারণে তার বৈধভাবে ভারতে থাকার সময় দ্রুত শেষ হয়ে আসছে। কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলসহ অন্যান্য সুযোগসুবিধা বাতিলের কারণে তাকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের ঝুঁকিও বাড়ছে। বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে মোট ৫১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে ৪২টিই হত্যা মামলা।
২০১৩ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বাক্ষরিত এবং ২০১৬ সালে সংশোধিত প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো যাবে। চুক্তি অনুসারে, কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কারণে অভিযোগ উঠলে তাকে প্রত্যর্পণে অস্বীকৃতি জানানো যাবে। তবে এখানে রাজনৈতিক বিবেচনার আওতায় পড়েনি হত্যার মতো অপরাধের অভিযোগ।
তবে যাই হোক না কেন, বাংলাদেশের সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসসের প্রতিবেদন অনুসারে, আশ্রয়ে থাকা ব্যক্তির প্রত্যর্পণের অনুরোধ আরেকটি কারণে প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে করা মামলা ‘ন্যায়বিচারের স্বার্থে সৎ উদ্দেশ্যে’ করা না হলে সরকার প্রত্যর্পণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।