যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মহারণ আজ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আজ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ভোটগ্রহণ করা হবে। এবারের নির্বাচনে হোয়াইট হাউসের টিকিটের জন্য মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন হাতি প্রতীকের রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও গাধা প্রতীকের ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের মধ্যে। দিনব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও ওয়াশিংটন ডিসির ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। আর এর মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হতে যাচ্ছে আগামী চার বছরের জন্য বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশটির মসনদে কে আরোহণের সুযোগ পাবেন। এ ভোটে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস নাকি দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসের টিকিট পাবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, এটি দেখার অপেক্ষায় গোটা বিশ্ব।
প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের রানিংমেট হিসেবে জেডি ভ্যান্স এবং কমলা হ্যারিসের রানিং মেট হিসেবে রয়েছেন টিম ওয়ালজ। এ ছাড়া নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে আরও রয়েছেন গ্রিন পার্টি থেকে জিল স্টেইন, লিবার্টারিয়ান পার্টি থেকে চেজ অলিভার, স্বতন্ত্র প্রার্থী কর্নেল ওয়েস্ট ও রবার্ট কেনেডি জুনিয়র।
এর আগে নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন কমলা হ্যারিস ও ডেনাল্ড ট্রাম্প। তারা তাদের ভাগ্য নির্ধারণি সুইং স্টেটগুলোর মধ্যে বেশি ইলেক্ট্রোরাল কলেজের পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা ও জর্জিয়ায় প্রচারে ছিলেন। যদিও ট্রাম্পের মনে করা হলেও হঠাৎই ঘুরে দাাঁড়ানো ওহাইও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে তার জন্য। শেষবেলার জনমত বলছে, ওই তিনটির সঙ্গে এই সুইং স্টেটটির ১৮টি ইলেক্ট্রোরাল কোলাজ কমলা ও ট্রাম্পের ভাগ্য নির্ধারণের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন : ইলেকটোরাল কলেজ ভোট কী, কীভাবে কাজ করে?
কোন অঙ্গরাজ্যে কত ইলেকটোরাল কলেজ ভোট
আলাবামা-৯ ভোট, কেনটাকি-৮ ভোট, উত্তর ডাকোটা-৩ ভোট, আলাস্কা-৩ ভোট, লুইসিয়ানা- ৮ ভোট, ওহিও-১৭ ভোট, অ্যারিজোনা-১১ ভোট, মেইন-৪ ভোট, ওকলাহোমা-৭ ভোট, আরকানসাস-৬ ভোট, মেরিল্যান্ড-১০ ভোট ওরেগন- ৮ ভোট, ক্যালিফোর্নিয়া-৫৪ ভোট, ম্যাসাচুসেটস-১১ ভোট, পেনসিলভানিয়া- ১৯ ভোট, কলোরাডো-১০ ভোট, মিশিগান-১৫ ভোট, রোড আইল্যান্ড-৪ ভোট, কানেকটিকাট-৭ ভোট, মিনেসোটা-১০ ভোট, দক্ষিণ ক্যারোলাইনা-৯ ভোট, ডেলাওয়্যার-৩ ভোট, মিসিসিপি-৬ ভোট, সাউথ ডাকোটা-৩ ভোট, ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া-৩ ভোট, মিসৌরি- ১০ ভোট, টেনেসি- ১১ ভোট, ফ্লোরিডা-৩০ ভোট, মন্টানা-৪ ভোট, টেক্সাস-৪০ ভোট, জর্জিয়া-১৬ ভোট, নেব্রাস্কা-৫ ভোট, উটাহ-৬ ভোট, হাওয়াই-৪ ভোট, নেভাদা-৬ ভোট, ভার্মন্ট-৩ ভোট, আইডাহো-৪ ভোট, নিউ হ্যাম্পশায়ার-৪ ভোট, ভার্জিনিয়া-১৩ ভোট, ইলিনয়-১৯ ভোট, নিউ জার্সি-১৪ ভোট, ওয়াশিংটন-১২ ভোট, ইন্ডিয়ানা-১১ ভোট, নিউ মেক্সিকো-৫ ভোট, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া-৪ ভোট, আইওয়া-৬ ভোট, নিউইয়র্ক-২৮ ভোট, উইসকনসিন-১০ ভোট, কানসাস-৬ ভোট, উত্তর ক্যারোলাইনা-১৬ ভোট ও ওয়াইওমিং-৩ ভোট।
ভোটগ্রহণ কখন শুরু ও শেষ হয়?
স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার বেশিরভাগ ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন এবং এরপরে ব্যালট গণনা করা হয়। তবে পোস্টাল ভোটিং সিস্টেম ব্যবহার করে বা আগাম ভোটিংয়ের দিন অনেক লোক আগেই ভোট দিয়ে ফেলেছেন। প্রতিটি অঙ্গরাজ্য নিজদের নিয়ম অনুযায়ী ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার সময় নির্ধারণ করে থাকে। এরপর শুরু হয় ভোট গণনা। তবে সাধারণত স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোট গণনা শুরু হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সময়ের ব্যবধানের কারণে এমনও হতে দেখা যায়, পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যে ভোট গণনা শুরু হয়ে যায়, কিন্তু আলাস্কা ও হাওয়াইয়ের মতো অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা তখনও ভোট দিতে যান৷
নির্বাচনের ফলাফল কখন পাওয়া যাবে?
নির্বাচনের সম্ভাব্য বিজয়ী কে, তা জানতে হয়তো কয়েক দিন ধরে অপেক্ষায় থাকতে হবে না। তারপরেও মাসের পর মাস ফলাফল ঠিকমতো চূড়ান্ত হয় না। যাইহোক, চূড়ান্ত ভোট গণনা হওয়ার অনেক আগেই অঙ্গরাজ্য এবং সম্পূর্ণ নির্বাচনের ফলাফলে সাধারণত বলা সম্ভব হয় যে, কোন প্রার্থী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন।
আরও পড়ুন : ট্রাম্প বনাম কমলা : গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে কার কী অবস্থান?
পেনসিলভেনিয়ার ফলাফল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর ভোটগ্রহণের চার দিন পরেই জো বাইডেনকে বিজয়ী বলা সম্ভব হয়েছিল। এ অঙ্গরাজ্য বাইডেনকে ২০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট প্রদান করে। এর মধ্য দিয়ে জয়ের জন্য তার প্রয়োজনীয় ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট নিশ্চিত হয়ে যায়। ২০১৬ সালে হিলারি ক্লিনটন ভোটের পরদিন সকালে ট্রাম্পকে বিজয়ী হিসেবে স্বীকার করে নেন।
আরও পড়ুন : মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাত সুইং স্টেটে কার অবস্থান কেমন
নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক কবে?
মার্কিন নির্বাচন আজ মঙ্গলবার ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনে যিনি বিজয়ী হবেন, ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে তার অভিষেক অনুষ্ঠান হবে। এর মধ্য দিয়ে তিনি চার বছরের জন্য বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশটি পরিচালনার দায়িত্ব পাবেন। এদিন ভোটাররা শুধু প্রেসিডেন্ট নয়, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ (প্রতিনিধি পরিষদ) এবং উচ্চকক্ষ মার্কিন সেনেটের প্রার্থীদেরও নির্বাচন করবেন।