টিউলিপের বিকল্প খুঁজছে যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে পদত্যাগে বাধ্য করা হতে পারে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মিত্রদের থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট নিয়েছেন। সেক্ষেত্রে তার বিকল্প কে হবেন, সে বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের ঘনিষ্ঠরা।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে আজ শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে সিটি মিনিস্টার টিউলিপের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে কয়েকজন প্রার্থীর সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছেন বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে দুর্নীতিবিরোধী নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি। গত সোমবার টিউলিপ সিদ্দিক নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানানোর আগে (শনি ও রোববার) এই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
স্টারমার জানিয়েছেন, টিউলিপের প্রতি তার সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এ বিষয়ে ডাউনিং স্ট্রিটের মুখপাত্র জানান, টিউলিপের বিকল্প প্রার্থীদের তালিকা তৈরির বিষয়টি ‘একেবারেই সত্য নয়।’ তবে, দ্য টাইমসকে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সূত্র জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে টিউলিপের বিকল্প কে হতে পারেন, তা বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অব মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লউরি ম্যাগনাসকে চিঠি লিখেছেন টিউলিপ। চিঠিতে মন্ত্রী পর্যায়ের কোনো আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন তিনি। টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেওয়া একাধিক সম্পত্তিতে বসবাস করেছেন।
ইতোমধ্যে টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের সাত সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। পাশাপাশি, রুশ অর্থায়নে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
টিউলিপের বিকল্প হিসেবে যাদের নাম এসেছে তারা হলেন—অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভসের দুই সহযোগী অ্যালিস্টেয়ার স্ট্র্যাথার্ন ও ইমোজেন ওয়াকার। আরও যাদের নাম বিবেচনা করা হচ্ছে, তারা হলেন—মন্ত্রিসভার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের ব্যক্তিগত সচিব (পিপিএস) ক্যালাম অ্যান্ডারসন, কনিষ্ক নারায়ণ, পরিবেশ বিভাগের পিপিএস জশ সায়মন্স ও র্যাচেল ব্লেক। অ্যাটর্নি জেনারেল লুসি রিগবি, মন্ত্রিসভার সহযোগী ও অর্থনীতিবিদ টরস্টেন বেলের নামও শোনা গেছে।
লেবার পার্টির এক সূত্র গণমাধ্যমটিকে জানান, টিউলিপ নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে এটাই ইঙ্গিত করছেন যে তিনি ‘নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়ে সম্মানজনক বিদায়ের’ পথ খুঁজছেন।