বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চায় ভারত
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা একটি গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশকে সমর্থন করি। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে—বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা এবং একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে নিজেদের সম্পর্কের উন্নয়ন করা। এটি উভয় দেশের জনগণকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে না।’
গতকাল শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ভারত তার জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পর্কিত সব ঘটনার ওপর নিবিড়ভাবে খেয়াল রাখে এবং বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর কর্মকাণ্ডগুলো। একইসঙ্গে তারা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতেও প্রস্তুত।
সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে উত্তেজনার ছড়ানো প্রসঙ্গে মুখপাত্র জয়সওয়াল বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত বেড়া নির্মাণ নিয়ে চুক্তি হয়েছে। মানব পাচার, গবাদি পশু পাচারসহ অন্যান্য অপরাধ বন্ধ করতে সীমান্ত বেড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বিশ্বাস, বাংলাদেশ ইতিবাচক ও গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে এই চুক্তিগুলো বাস্তবায়ন করবে।’
আগামী ১৬ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে কী আলোচনা হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা চলছে। আলোচনা চূড়ান্ত হলে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে গত ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের যোগ দিতে ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেখানে এক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশ ইস্যুতে কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।
দ্বিপাক্ষিক ওই বৈঠকে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ বা নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে এই মুখপাত্র বলেন, ‘বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলোর পাশাপাশি বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের বিষয়ে নির্দিষ্ট করে আলোচনা হয়েছে কিনা আমি নিশ্চিত নই।’
আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা নিশ্চিত, জলবায়ু পরিবর্তন, সন্ত্রাসবাদ ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসমস্যা মোকাবিলায় কোয়াড (কোয়াড্রিলেটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ) জোটে রয়েছে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। চার দেশের এই জোটে আরও রয়েছে জাপান ও অস্ট্রেলিয়া।
কোয়াড সম্পর্কিত কোনো বার্তা থাকলে চার দেশের সমন্বয়ে জানানো হবে উল্লেখ করে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, চার দেশ কোয়াডের অংশীদারিত্বকে কীভাবে পরিচালনা করতে চায়, সেটি কোয়াডের পক্ষ থেকে জানানো হবে। তবে নতুন ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম দিনেই ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক এই বৈঠক কোয়াডের জন্য সুসংবাদ বলা যায়।