এবার আমেরিকার অংশ কিনতে চায় ডেনমার্ক!
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/12/us-denmark.jpg)
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডাকে ৫১তম রাজ্য বানানোর কথা বলেছেন। এ ছাড়া পানামা খাল দখলের ইঙ্গিত, গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইচ্ছা এবং গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাবও তুলে ধরেছেন তিনি। কিন্তু এবার ডেনমার্ক তার পাল্টা জবাব দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। খবর দ্যা গার্ডিয়ানের।
ডেনমার্কের এই উদ্যোগকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে দুই লাখের বেশি নাগরিক একটি ব্যঙ্গাত্মক পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে, "আপনি কি কখনও মানচিত্রে তাকিয়ে ভেবেছেন, ডেনমার্কের কি দরকার? আরও রোদ, পাম গাছ এবং রোলার স্কেট।"
পিটিশনে আরও বলা হয়েছে, "এখন আমাদের হাতে একমাত্র সুযোগ আছে সেই স্বপ্নটিকে বাস্তবে পরিণত করার। চলুন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে ক্যালিফোর্নিয়া কিনে ফেলি!"
পিটিশনের ওয়েবসাইটের মূল স্লোগান, “মেক ক্যালিফোর্নিয়া গ্রেট এগেইন”, যেখানে ব্যান্ড মেটালিকার লার্স উলরিচ এবং অভিনেতা ভিগো মর্টেনসেনের মতো ড্যানিশ তারকারা ক্যালিফোর্নিয়াকে “নতুন ডেনমার্ক” করার পক্ষে মত দিয়েছেন।
পিটিশনে আরও লেখা রয়েছে, "আমরা হলিউডে আনবো 'হুগা' সংস্কৃতি, বেভারলি হিলসে বাইক লেন এবং প্রতিটি মোড়ে পরিবেশবান্ধব স্মোরেব্রড খাবারের দোকান। আইনের শাসন, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা এবং বাস্তবভিত্তিক রাজনীতি এখানে প্রযোজ্য হবে।"
পিটিশনটিতে ব্যঙ্গ করে বলা হয়েছে, "ট্রাম্প ক্যালিফোর্নিয়ার ভক্ত নন। তিনি এটিকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত রাজ্য’ বলেছেন এবং দীর্ঘদিন ধরেই এর নেতাদের সঙ্গে বিরোধে রয়েছেন। সঠিক দামে তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিক্রি করে দিতে পারেন!"
ট্রাম্প এবং ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসমের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। সম্প্রতি নিউসম ৫০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করেছেন ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের জন্য, আর ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়াকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তহবিল কমিয়ে দেওয়ার।
পিটিশনটির লক্ষ্য এক ট্রিলিয়ন ডলার সংগ্রহ এবং পাঁচ লাখ স্বাক্ষর অর্জন। ডেনমার্কের এই পিটিশন ব্যঙ্গাত্মক হলেও, ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার পরিকল্পনা বেশ গুরুতর।
২০১৯ সালে তিনি প্রথম এই প্রস্তাব দেন। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ দরকার বলে দাবি করেন। আর্কটিক অঞ্চলের এই দ্বীপ তেল, গ্যাস ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদের উৎস, যা বরফ গলার কারণে ক্রমশ উন্মুক্ত হচ্ছে।
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2025/02/12/denmark.jpg)
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন জানিয়েছেন, “গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। এটি গ্রিনল্যান্ডবাসীদের।”
অন্যদিকে, গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুতে এগেদে জানিয়েছেন, "আমরা গ্রিনল্যান্ডবাসী। আমরা আমেরিকান হতে চাই না, এমনকি ড্যানিশও নয়। আমাদের ভবিষ্যৎ আমরাই নির্ধারণ করব।"
সম্প্রতি জর্জিয়ার রিপাবলিকান প্রতিনিধি বাডি কার্টার গ্রিনল্যান্ড কেনার অনুমোদন দিতে একটি বিল উত্থাপন করেছেন, যেখানে দ্বীপটির নাম বদলে “রেড, হোয়াইট অ্যান্ড ব্লুল্যান্ড” রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে, ডেনমার্কের এই ব্যঙ্গাত্মক প্রতিক্রিয়া ট্রাম্পের এই ভূমি দখলের প্রবণতাকে ব্যঙ্গ করলেও, এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।