শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়তেও রাজি জেলেনস্কি

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যদি শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তার পদত্যাগ করার প্রয়োজন হয়, তবে তিনি তা করতেও প্রস্তুত। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। খবর বিবিসির।
জেলেনস্কি বলেন, ‘যদি শান্তি আনতে আমার পদ ছেড়ে দিতে হয়, আমি প্রস্তুত। আমি আমার প্রেসিডেন্ট পদকে ন্যাটো সদস্যপদের জন্য বিনিময় করতে পারি, যদি এমন শর্ত থাকে’।
এ মন্তব্য করার কয়েকদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ‘নির্বাচনবিহীন স্বৈরাচার’ বলে সমালোচনা করেছিলেন। এর প্রতিক্রিয়ায় জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি কটাক্ষ বুঝেছি, তবে এতে আমি আহত হইনি। একজন স্বৈরাচার হলে তিনি আহত হতেন।’
ইউক্রেনের সংবিধান অনুযায়ী, সামরিক আইন চলাকালীন দেশটিতে নির্বাচন স্থগিত থাকে। রাশিয়ার আক্রমণের পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক আইন জারি করা হয়।
আজ সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জেলেনস্কি পশ্চিমা নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন, যার কিছু অংশ কিয়েভে এবং কিছু অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি জানিয়েছেন, ন্যাটো সদস্যপদ আলোচনার ‘টেবিলে থাকবে’, তবে ফলাফল কী হবে তা নিশ্চিত নন।
জেলেনস্কি বলেন, মার্কিন সাহায্য এখন পর্যন্ত অনুদান হিসেবেই এসেছে, ঋণ নয়। তিনি আরও জানান, তিনি এমন কোনো নিরাপত্তা চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন না যা ‘প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে’।
এদিকে, গতকাল রোববার ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়া শনিবার রাতে দেশটির ওপর ২৬৭টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যা এককভাবে সর্ববৃহৎ আক্রমণ।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, ১৩টি অঞ্চলকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল, যার মধ্যে ১৩৮টি ড্রোন গুলি করে নামানো হয়েছে এবং ১১৯টি ড্রোন ইলেকট্রনিক জ্যামিংয়ের মাধ্যমে অকার্যকর করা হয়েছে। কিয়েভে হামলার ফলে ছয় ঘণ্টা ধরে বিমান হামলার সতর্কতা বাজানো হয়।

জেলেনস্কি ইউক্রেনের জরুরি সেবাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ‘টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত শান্তি’ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনস্কা এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে লেখেন, ‘শত শত ড্রোন রাতভর মৃত্যু ও ধ্বংস এনেছে। এটি ছিল আরেকটি রাত যেখানে মানুষ প্রিয়জনদের বেঁচে থাকার জন্য প্রার্থনা করছিল।’
সোমবার যুদ্ধ চতুর্থ বছরে পা রাখবে। এই মুহূর্তে ইউক্রেন, ইউরোপীয় মিত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি কাজ করছে।
এই সপ্তাহে সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বৈঠক হয়েছে, যেখানে ইউক্রেন বা ইউরোপীয় নেতাদের উপস্থিতি ছিল না। এর প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় নেতারা প্যারিসে জরুরি এক শীর্ষ সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন।