মার্কিন সেকেন্ড লেডির সফর ‘অত্যন্ত আক্রমণাত্মক’ : গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুটে বি এগেদে দ্বীপটিতে মার্কিন সেকেন্ড লেডি ঊষা ভান্সসহ সরকারি কর্মকর্তাদের পরিকল্পিত সফরকে ‘অত্যন্ত আক্রমণাত্মক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বায়ত্তশাসিত এই ড্যানিশ ভূখণ্ডটিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার কথা বলার পর এই সফরকে ঘিরে দুদেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকবে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর সিএনএনের।
গ্রিনল্যান্ডের সংস্কৃতি ও ঐক্যের বন্ধন উদযাপনের অংশ হিসেবে সেখানকার ঐতিহ্যবাহী কুকুরের দৌড় উপভোগ করতে এ সপ্তাহে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভান্সের স্ত্রী ঊষা এই দ্বীপদেশটিতে আসছেন। হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানা গেছে। পাশাপাশি এ সপ্তাহে মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজও গ্রিনল্যান্ডে যাবেন বলে সফরকারী দলের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে।
গ্রিনল্যান্ড থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্র সেরমিটসিয়াকে গতকাল রোববার (২৩ মার্চ) প্রকাশিত এক সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী মুটে বি এগেদে এই সফরকে অত্যন্ত আক্রমণাত্মক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি মাইক ওয়াল্টজের সফরের বিরোধিতাও করেন। মুটে এগেদে বলেন, ‘মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা গ্রিনল্যান্ডে কী করবেন? একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে আমাদের ওপর শক্তি প্রদর্শন করা। সন্দেহ নেই এখানে তার উপস্থিতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মিশন ও মার্কিন বিশ্বাসকে আরও উসকে দেবে। এর ফলে চাপ বাড়বে।’

গ্রিনল্যান্ডকে নিজেদের করে নিতে ট্রাম্পের চিন্তাধারা এই দ্বীপদেশটিকে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসে। এই ভূখণ্ডটিতে বিরল খনিজ পদার্থের প্রচুর মজুদ রয়েছে, যা হাইটেক শিল্পের প্রধান উপকরণ। এসব কারণে আর্কটিক অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন। ফলে দ্বীপদেশটির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করে নেওয়ার বলছেন। এক্ষেত্রে শক্তিপ্রয়োগ করে বা অর্থনৈতিকভাবে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে তা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে ডেনমার্ক ও গ্রিনল্যান্ড এই ধারণার কথা বাতিল করে দিয়েছে।
তবে এ মাসেই কংগ্রেসের এক যৌথ অধিবেশনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি যে কোনোভাবেই হোক আমরা তা (গ্রিনল্যান্ড) পেতে যাচ্ছি।’
ডেনমার্কের কাছ থেকে গ্রিনল্যান্ডকে স্বাধীন করার জন্য জন্য চাপ দেওয়া প্রধানমন্ত্রী এগেদে বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের তৎপরতা ব্যর্থ হবে গ্রিনল্যান্ডের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণে।
এগেদের ক্ষমতাসীন বামপন্থি দল আতাকাতিগিট এ মাসের শুরুতে পার্লামেন্ট নির্বাচনে পরাজিত হলেও তিনি নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করা পর্যন্ত তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন জেন্স-ফ্রেডেরিক নিয়েলসেন। নির্বাচনে নিয়েলসেনের দল বিজয়ী হয়। মার্কিন কর্মকর্তাদের সফর সম্পর্কে তিনি এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এটা অসম্মানের।

তবে হোয়াইট হাউস বলেছে ঊষা ভান্সের সফরটি সাংস্কৃতিক ঘটনা। এক বিবৃতিতে বলা হয়, মার্কিন সেকেন্ড লেডি তার সফরে ছেলেসহ একটি প্রতিনিধি দল গ্রিনল্যান্ডের ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরে দেখবেন। এছাড়া তারা দ্বীপদেশটির ঐহিত্যবাহী কুকুরের দৌড় প্রতিযোগিতাও উপভোগ করবেন।