ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে বাধার মুখে পড়লেন মেরি লি পেন

ইউরোপীয় ইউনিয়নের তহবিল থেকে নিজ দলের নেতাকর্মীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ফ্রান্সের অতিডানপন্থি দল ন্যাশনাল র্যালি পার্টির নেত্রী মেরি লি পেন। প্যারিসের একটি আদালতের রায় অনুসারে শাস্তি হিসেবে যদিও তাকে জেলে যেতে হচ্ছে না তবে, উদ্বেগের বিষয় হলো দেশের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে ২০২৭ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ হারাতে চলেছেন তিনি। আদালত এ ক্ষেত্রে তার ওপর পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। খবর এএফপির।
ফ্রান্সের তিন বারের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও ২০২৭ সালের নির্বাচনের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল প্রার্থী লি পেনকে আদালতের রায় অনুযায়ী চার বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। তবে তাকে জেলখানায় যেতে হবে না। আদালত রায়ে বলেছেন, মেরি লি পেনের দুই বছরের সাজা স্থগিত করা হলো এবং তাকে বাকী দুই বছর ‘ইলেকট্রনিক ব্রেসলেট’ পরে কারাগারের বাইরে সময় কাটাতে হবে।
তবে লি পেনের আইনজীবী রুডল্ফ বোশেলে জানিয়েছেন, ন্যাশনাল র্যালি পার্টির এই নেত্রী রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। দলটির মুখপাত্র ও দেশটির পার্লামেন্ট সদস্য লরেন্ট জ্যাকোবেলি বলেছেন, লি পেনকে দোষী হিসেবে বিবেচিত করার পর থেকে তিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে, বিশ্লেষকরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, বিচারের এই রায় ফ্রান্সের রাজনৈতিক সংকটকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
মামলাটির বিচারে মেরি লি পেনসহ মোট ২৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় যাদের সবাই ন্যাশনাল র্যালি পার্টির কর্মকর্তা ও সহকারী। আদালত জানায়, মোট ২৯ লাখ ইউরো নয়-ছয় করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
তবে মেরি লি পেন বলেছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। বিচারের রায় ঘোষণার আগেই তিনি আদালত কক্ষ ছেড়ে যান এবং প্যারিসে ন্যাশনাল র্যালি পার্টির সদরদপ্তরে জরুরি বৈঠকের ডাক দেন। এ ছাড়া আজ সোমবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলে লি পেনের একটি সাক্ষাৎকার প্রচারিত হবে বলেও দল থেকে জানানো হয়।
২০২৪ সালের আইনসভা নির্বাচনের পর ফ্রান্সের পার্লামেন্টে সবচেয়ে বড় দল হিসেবে আবির্ভূত হয় র্যালি পার্টি। নির্বাচনি জরিপেও দেখা যায়, ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম ধাপে শীর্ষস্থান ধরে রাখতে যাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের জন্যও তাকে বেশ শক্ত অবস্থান ধরে রাখতে দেখা যায়।
ফ্রান্সে সাংবিধানিকভাবে দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকা যায় না। আর এ কারণে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রার্থী হতে পারবেন না।