সৌদি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরলেন মোদি

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে তিনি নয়াদিল্লিতে পৌঁছান। খবর এনডিটিভির।
সৌদি সফরের মূল সূচি অনুযায়ী তার বুধবার রাতে দেশে ফেরার কথা ছিল। তবে হামলার পরপরই তিনি দ্রুত ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
সূত্র জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল সৌদি রাজপ্রাসাদে গিয়ে হঠাৎ এই সফর সংক্ষিপ্ত করার বিষয়ে সৌদি নেতৃত্বকে অবহিত করেন।
ভারতে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত সুহেল আজাজ খান জানান, “কাশ্মীরের সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সৌদি যুবরাজ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং প্রয়োজনে ভারতের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।”
প্রধানমন্ত্রী মোদির দেশে ফেরার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লিতে একটি উচ্চপর্যায়ের ক্যাবিনেট সিকিউরিটি কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।
এদিকে, হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানান, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ফোন করে নিহতদের জন্য শোক জানাবেন এবং ভারতের পাশে থাকার আশ্বাস দেবেন।
ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, “কাশ্মীর থেকে আসা খবর গভীরভাবে উদ্বেগজনক। যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের পাশে রয়েছে। নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য লাভ হোক।”
তিনি আরও লেখেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং ভারতের অসাধারণ জনগণের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন ও গভীর সহানুভূতি রয়েছে।”
এই হামলা এমন এক সময়ে হয়েছে যখন প্রধানমন্ত্রী মোদি সম্প্রতি ভারত সফররত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, পেহেলগামের বিখ্যাত 'মিনি সুইজারল্যান্ড' এলাকায় পর্যটকদের ওপরে অতর্কিতে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। খাবারের দোকান, পনি রাইড ও পিকনিক করছিলেন এমন লোকদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয়।
স্থানটি দুর্গম হওয়ায় আহতদের উদ্ধারে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে। নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের পেহেলগাম ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে।
হামলার খবর পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করে কাশ্মীরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। রাত ৯টার কিছু পরে অমিত শাহ শ্রীনগর পৌঁছান এবং সরাসরি রাজভবনে যান।
কাশ্মীর পুলিশের ডিজি নলিন প্রভাত তাকে পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্রিফ করেন। এই সময় উপস্থিত ছিলেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা, মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহন ও গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান তপন দে।
বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেন, “এটা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হওয়া সবচেয়ে বড় হামলা। আমাদের অতিথিদের ওপর এই হামলা জঘন্য। হামলাকারীরা মানুষ নয়, পশুরও অধম।”
কাশ্মীরের এই ঘটনায় দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দার ঝড় বইছে।