নতুন পোপ নির্বাচনে ‘রুদ্ধদ্বার বৈঠক’ শুরু ৭ মে

ক্যাথলিক বিশ্বের নতুন ধর্মগুরু নির্বাচনের প্রক্রিয়া আগামী মাসেই শুরু হতে যাচ্ছে। ভ্যাটিকান সিটি জানিয়েছে, আগামী ৭ মে সিস্টিন চ্যাপেলের অভ্যন্তরে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে (কনক্লেভ) মিলিত হবেন কার্ডিনালরা। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ১৩৫ জন কার্ডিনাল এই রুদ্ধদ্বার ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন। খবর বিবিসির।
ইস্টার্ন মানডে-তে ৮৮ বছর বয়সে পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণের পর গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয়ভাবে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এ সময় বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ ও রাজপরিবারের সদস্যসহ বিপুল শোকাহত মানুষ সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে সমবেত হয়েছিলেন। তার কফিন রোমের রাস্তায় এক দীর্ঘ শোভাযাত্রার মাধ্যমে সান্তা মারিয়া মাগিওরে ব্যাসিলিকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাততালি ও পতাকা নেড়ে তাদের প্রিয় পোপের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। রোববার পোপ ফ্রান্সিসের সমাধির ছবিও প্রকাশ করা হয়, যেখানে তার সমাধির ওপর একটি সাদা গোলাপ শোভা পাচ্ছিল।
এরপরই নতুন পোপ নির্বাচনের এই দিনক্ষণ ঘোষণা করল ভ্যাটিকান। তবে পোপ নির্বাচন প্রক্রিয়া কতদিনে সম্পন্ন হবে তার নির্দিষ্ট সময়সীমা ধার্য করা হয়নি। সর্বশেষ ইতিহাস বলছে, ২০০৫ ও ২০১৩ সালের পূর্ববর্তী দুটি কনক্লেভ মাত্র দুই দিনেই তাদের নতুন পোপ বেছে নিয়েছিল।
ভ্যাটিকানের মুখপাত্র মাত্তেও ব্রুনি জানান, কনক্লেভের শুরুতে কার্ডিনালরা সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় একটি বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেবেন। এরপর ভোটদানের যোগ্য কার্ডিনালরা গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য সিস্টিন চ্যাপেলে একত্রিত হবেন। সিস্টিন চ্যাপেলে প্রবেশের পর নতুন পোপ নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত কার্ডিনালদের বাইরের বিশ্বের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগের অনুমতি থাকবে না।

কনক্লেভের প্রথমদিন বিকেলে কেবল একবার ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এরপর থেকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ চারবার ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া চলবে। নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট অত্যাবশ্যক, যা নির্ধারণে বেশ সময় লাগতে পারে।
প্রত্যেক কার্ডিনাল একটি ছোট কার্ডে তাদের পছন্দের প্রার্থীর নাম ল্যাটিন ভাষায় ‘আমি সুপ্রিম পন্টিফ হিসেবে নির্বাচন করছি’ এই বাক্যটির পর লিখে তাদের ভোট প্রদান করবেন। যদি কনক্লেভের তৃতীয় দিন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত না আসে, তবে কার্ডিনালরা একদিনের জন্য প্রার্থনা বিরতিতে যেতে পারেন।
এ সময় সারা বিশ্ব সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনি থেকে নির্গত ধোঁয়ার দিকে উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে। কালো ধোঁয়া নতুন কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে না পারার ইঙ্গিত দেবে। এর পরবর্তী দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদিকে সাদা ধোঁয়া নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার সুস্পষ্ট বার্তা বহন করবে।