ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম প্রান্তিকে সংকুচিত হয়েছে মার্কিন অর্থনীতি

আগ্রাসী বাণিজ্য নীতি প্রবর্তনের মাধ্যমে সারা বিশ্বব্যাপী শুল্ক আরোপ করে মার্কিন অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা হবে, এমনটাই দাবি করে আসছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম তিন মাসে মার্কিন অর্থনীতি সত্যিকার অর্থে আগের চেয়ে আরও সংকুচিত হয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন অর্থনীতির সার্বিক প্রবৃদ্ধির পরিমাপক বা মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকের ২.৪ শতাংশ থেকে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ০.৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ২০২২ সালের পর থেকে এই সংকোচন যুক্তরাষ্ট্রকে মন্দার প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এপ্রিল মাসে ভোক্তার মনোভাবে বিশাল পতন তৈরি হয়েছে এবং তা ১৯৯০ সালের পর থেকে এখন সর্বনিম্ন স্তরে প্রায় ৩২ শতাংশ কমে গেছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম প্রান্তিকে বেশিরভাগ সময় ব্যয় করেছেন শুল্ক আরোপের হুমকিধমকি দিতে বা বলা যেতে পারে কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ক্ষণস্থায়ীভাবে শুল্কআরোপের বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে এবং চীনকে লক্ষ্য করে তাদের রপ্তানি পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করতে।
তবে দ্বিতীয় প্রান্তিকের শুরুর দিনগুলোতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনকে বাদ রেখে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের নির্দেশ স্থগিত করেছেন। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের পণ্য আমদানিতে বৈশ্বিক ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন তিনি এবং চীন থেকে পণ্য আমদানিতে ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।

অবশ্য ট্রাম্প সুনির্দিষ্ট কিছু দেশের ওপর ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের এই সিদ্ধান্ত ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন মূলত মার্কিন শেয়ার বাজারের ব্যাপক পতনের কারণে।
গত সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, চীনের ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ওপর থেকে ‘উল্লেখযোগ্যভাবে’ শুল্ক আরোপ কমানো হবে, তবে তা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে না। এক্ষেত্রে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হোয়াইট হাউস কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে খুবই সংবেদনশীল, যদিও এর প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতে। গত মাসে তিনি ইউএস ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। এর কারণ, পাওয়েল বলেছিলেন ট্রাম্পের শুল্কারোপের কারণে স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। তবে শেয়ার বাজারে ব্যাপক পতনের পর ট্রাম্প তার কথা ঘুরিয়ে বলেন, পাওয়েলকে চাকরিচ্যুত করার কোনো ইচ্ছা তার নেই।