ভারতে ছাড়পত্র বাতিল, হাইকোর্টে তুরস্কের বিমান সংস্থা

জাতীয় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ভারত সরকারের ছাড়পত্র বাতিলের পর আইনি পথে হাঁটছে তুরস্ক ভিত্তিক বিমান পরিষেবা সংস্থা চেলেবি। সংস্থাটি সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে একটি আবেদন করেছে।
আজ শুক্রবার (১৬ মে) দায়ের করা ওই আবেদনে ‘চেলেবি এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস ইন্ডিয়া’ দাবি করে, কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ দর্শানো ছাড়াই ‘অস্পষ্ট’ জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার চেলেবির নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করে ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল নিরাপত্তা ব্যুরো (বিসিএএস)। ভারতের নয়টি প্রধান বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও কার্গো পরিষেবা প্রদান করে আসছে সংস্থাটি।
বিসিএএসের আদেশে বলা হয়, ‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ এই নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে।
দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল প্রতিমন্ত্রী মুরলীধর মোহল এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘চেলেবি এয়ারপোর্ট সার্ভিসেস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড একটি তুরস্ক-ভিত্তিক কোম্পানি এবং দেশের বহু বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড সার্ভিস দেয়। তুরস্কের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে পাকিস্তানকে সমর্থন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি জাতীয় নিরাপত্তার একটি উদ্বেগের কারণ। তাই নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই দেশে চেলেবিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
হাইকোর্টের আবেদনে ছাড়পত্র ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে চেলেবি। সংস্থাটি বলছে, ভারত সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রতিষ্ঠানটির ৩ হাজার ৭৯১ জন কর্মীর জীবিকা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার কেন্দ্র সরকারের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় চেলেবি জানিয়েছিল। সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা কোনোভাবেই তুর্কি সংস্থা নই। আমরা কর্পোরেট গভর্নেন্স, স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত নীতিগুলি সম্পূর্ণরূপে মেনে চলি। আমাদের কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শ নেই এবং কোনো বিদেশি সরকার বা ব্যক্তির সঙ্গে কোনো যোগসূত্র নেই।’
সংস্থাটি আরও জানায়, ‘চেলেবি এভিয়েশন বিমান পরিষেবা ক্ষেত্রে ৬৫ বছরেরও বেশি সময়ের ঐতিহ্যবাহী একটি বিশ্বব্যাপী সংস্থা, যা তিনটি মহাদেশের ছয়টি দেশে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও কার্গো পরিষেবা প্রদান করে। আমরা যে দেশে কাজ করি, সেই দেশের বিমান খাত, জাতীয় অর্থনীতি ও স্থানীয় কর্মসংস্থানে অর্থপূর্ণ অবদান রাখাই আমাদের লক্ষ্য।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের নভেম্বরে চেলেবিকে নিরাপত্তা ছাড়পত্র দিয়েছিল ভারত। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সংস্থাটি দিল্লি, বেঙ্গালুরু ও গোয়াসহ নয়টি বিমানবন্দরে প্রতি বছর প্রায় ৫৮ হাজার ফ্লাইট এবং ৫ দশমিক ৪ লাখ টন কার্গো পরিচালনা করে।