যুদ্ধবিরতি নিয়ে যা বললেন পাকিস্তান আইএসপিআরের ডিজি

পাকিস্তান আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক (ডিজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, “পাকিস্তান সহিংস জাতি নয়, বরং শান্তিকামী ও দায়িত্বশীল জাতি।” ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির প্রেক্ষাপটে তিনি এসব কথা বলেন। খবর ডনের।
আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, “আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হলো শান্তি। আমরা সংঘাত চাই না। আমরা একটি শান্তিকামী ও দায়িত্বশীল জাতি।” তিনি আরটি অ্যারাবিককে এই সাক্ষাৎকারটি দেন, যেটি প্রচার করে পিটিভি নিউজ।
গত মাসে কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি হামলার অভিযোগ করা হয় ভারতের পক্ষ থেকে—যার কোনও প্রমাণ এখনও উপস্থাপন করেনি দিল্লি। পাকিস্তান অভিযোগটি অস্বীকার করেছে এবং একটি নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যকার উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ।
আইএসপিআর মহাপরিচালক বলেন, “ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র নিজেই যুদ্ধবিরতির জন্য অনুরোধ করেন। আমরা শান্তি চাই, তাই বললাম—কেন নয়?”
তিনি আরও জানান, “আমাদের কূটনীতিকরা অসাধারণ দক্ষতা ও বিচক্ষণতায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করে চমৎকার ভূমিকা রেখেছেন।”
পাল্টা প্রতিক্রিয়া ও সামরিক অভিযানের বিবরণ
৬-৭ মে রাতে ভারতের বিমান হামলায় পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরে ৩০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। জবাবে পাকিস্তান পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে এবং ডজন খানেক ড্রোন জব্দ করে।
৯ মে রাতে ভারত আবার পাকিস্তানের বিমানঘাঁটি ও সামরিক স্থাপনাগুলিতে হামলা চালায়। জবাবে পাকিস্তান চালায় ‘অপারেশন বুনিয়ানুম মারসুস’, যার আওতায় ভারতের সামরিক স্থাপনাগুলো টার্গেট করা হয়।
আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, “৯ ও ১০ মে রাতে ভারত আরও ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে আমাদের ভয় দেখাতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল, পাকিস্তানের জাতি এবং সেনাবাহিনী কখনও মাথা নত করে না।”
তিনি দাবি করেন, “আমাদের জবাব ছিল দায়িত্বশীল, ভারসাম্যপূর্ণ এবং পুরোপুরি সামরিক লক্ষ্যবস্তু-কেন্দ্রিক—একজন বেসামরিক নাগরিকও ক্ষতিগ্রস্ত হননি।”
তদন্তে অনীহা ভারতের, শান্তিতে প্রস্তুত পাকিস্তান
শরীফ চৌধুরী বলেন, “পেহেলগাম হামলার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভারতের মিডিয়া পাকিস্তানকে দোষারোপ করে, অথচ তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দু’দিন পর বলে, তদন্ত চলছে।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “তদন্ত ছাড়া এই ধরনের অভিযোগ কি যুক্তিসঙ্গত? আমরা স্পষ্ট বলেছি—যদি প্রমাণ থাকে, নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিন, আমরা সহযোগিতা করব। কিন্তু ভারত সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।”

তিনি অভিযোগ করেন, “ভারত একতরফাভাবে আমাদের মসজিদে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যেখানে নারী, শিশু ও বয়স্করা শহীদ হন।”
চৌধুরী আরও বলেন, “ভারতই এ অঞ্চলে সন্ত্রাসের প্রকৃত পৃষ্ঠপোষক। তারা বেলুচিস্তান ও পাকিস্তানে তৎপর বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীকে সহায়তা করছে, যার মধ্যে খারিজ বা ‘ফিতনা আল খারিজ’ নামক টিটিপি অন্যতম।”
গত মাসে পাকিস্তান দাবি করে, ভারত-প্রশিক্ষিত এক জঙ্গিকে জেলম থেকে আটক করা হয়েছে।