সুদানে কার্গো বিমানে বোমা হামলা

সুদানের পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর অঞ্চলে আধাসামরিক বাহিনীর (আরএসএফ) নিয়ন্ত্রিত একটি বিমানবন্দরে কার্গো বিমানে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, স্থানীয় সময় বুধবার (৪ জুন) সকালে অবতরণের পরপরই বিমানটিতে হামলা চালানো হয়। এই ঘটনা সুদানের চলমান সংঘাতের ভয়াবহতা ও মানবিক সংকটকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির দক্ষিণ দারফুর রাজ্যের রাজধানী নিয়ালার বিমানবন্দরগুলো সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহ ধরে বারবার বিমান হামলার শিকার হচ্ছে। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে দেশটির সেনাবাহিনী আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে।
সুদানের নেতা আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের অধীনে থাকা সেনাবাহিনী কিংবা মোহাম্মদ হামদান দাগলোর নেতৃত্বে থাকা আরএসএফ, কেউই সর্বশেষ হামলা সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি।
বিমানবন্দরের কাছে বসবাসকারী একজন প্রত্যক্ষদর্শী এএফপিকে বলেন, ‘সকাল ৫ টা ৩০ মিনিটে আমি রানওয়েতে একটি কার্গো বিমান অবতরণ করতে দেখি। আধা ঘণ্টা পর আমি বিস্ফোরণের শব্দ শুনি এবং বিমানটি থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখি।’ ওই এলাকার আরও দুই প্রত্যক্ষদর্শী একই তথ্য জানিয়েছেন। আরও কয়েকজন বলছেন, প্রায় এক ঘণ্টা ধরে শহরজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
দেশটির বেসামরিক জনগণের উপর দমন-পীড়নের কারণে নিরাপত্তার জন্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে এই তথ্য জানিয়েছেন তারা। আরএসএফ ২০২৩ সাল থেকে নিয়ালা নিয়ন্ত্রণ করছে।
এদিকে বুধবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) জানিয়েছে, কয়েক মাস ধরে ‘নির্বিচারে’ সামরিক বিমান হামলায় দারফুরের বৃহত্তম শহরটিতে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে যখন সেনাবাহিনী সুদানের বিভিন্ন অঞ্চল পুনরুদ্ধার করার জন্য পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছিল, তখন তারা ‘নিয়ালার আবাসিক এবং বাণিজ্যিক এলাকাগুলিতে অপরিকল্পিতভাবে বিমান থেকে বোমা ফেলেছিল’।

চিকিৎসা বিষয়ক দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্সের মতে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি পাঁচটি বোমা হামলায় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলিতে ৩২ জন নিহত হয়েছিল। এই ভুল আক্রমণগুলোতে বহু পুরুষ, নারী ও শিশু হত্যা হয়েছে, পরিবারগুলোকে ধ্বংস করেছে এবং বাস্তুচ্যুতি ঘটিয়েছে।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটির ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এটি কার্যকরভাবে সুদানকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে, যেখানে সেনাবাহিনী কেন্দ্র, উত্তর ও পূর্ব নিয়ন্ত্রণ করছে। অন্যদিকে আরএসএফ দারফুরের প্রায় সবটা এবং মিত্রদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দক্ষিণের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে।