পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির কথা জানালেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার (৩০ জুলাই) ঘোষণা করেছেন, ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। একই সঙ্গে, রাশিয়া থেকে অস্ত্র ও জ্বালানি কেনার জন্য ভারতের ওপর অনির্দিষ্ট জরিমানাও আরোপ করা হবে। এই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
ট্রাম্প বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে এই চুক্তিতে দেশ দুটির বিশাল তেল মজুদের যৌথ উন্নয়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তার স্ব-আরোপিত ১ আগস্টের সময়সীমার আগে দক্ষিণ কোরিয়াসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত থাকার মধ্যেই এই ঘোষণা এলো।
ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটি চুক্তি সম্পন্ন করেছি, যার মাধ্যমে পাকিস্তান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিশাল তেল মজুদ উন্নয়নে এক সঙ্গে কাজ করবে। আমদের এই অংশীদারত্বের নেতৃত্ব দেবে এমন তেল কোম্পানি নির্বাচনের প্রক্রিয়াধীন। কে জানে, হয়তো তারা একদিন ভারতে তেল বিক্রি করবে!’ চুক্তির অতিরিক্ত কোনো বিস্তারিত তথ্য তিনি দেননি।
ট্রাম্প জানান, তার প্রশাসন আজ হোয়াইট হাউসে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কাজ করতে খুব ব্যস্ত। আমি অনেক দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি, যাদের সবাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অত্যন্ত খুশি করতে চান।
ট্রাম্প ডজনখানেক দেশকে ১ আগস্টের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে অথবা তার ইতোমধ্যেই ঘোষিত ১০ শতাংশ বেসলাইনের চেয়ে অনেক বেশি শুল্ক আরোপের মুখোমুখি হতে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। একটি পৃথক ঘোষণায়, ট্রাম্প বলেছেন, ১ আগস্টের সময়সীমা দৃঢ়ভাবে বহাল আছে, এটি বাড়ানো হবে না।
ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। ভারতের শুল্ক বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ও নয়াদিল্লির বাণিজ্য বাধাগুলো খুবই কঠিন ও বিরক্তিকর। এই ২৫ শতাংশ শুল্ক এপ্রিলের ঘোষণার চেয়ে কিছুটা কম হলেও অন্যান্য এশীয় দেশের তুলনায় এটি বেশি।
ভারত ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে প্রথম দিকের প্রধান অর্থনৈতিক অংশীদারদের একজন ছিল, কিন্তু তাদের কৃষি ও অন্যান্য বাজার পুরোপুরি খুলতে না চাওয়ার কারণে এখনো কোনো বাণিজ্য চুক্তি হয়নি।
ট্রাম্প বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে বলেন, মনে রাখবেন— ভারত আমাদের বন্ধু হলেও আমরা বছরের পর বছর ধরে তাদের সঙ্গে তুলনামূলকভাবে খুব কম ব্যবসা করেছি। কারণ তাদের শুল্ক অনেক বেশি, বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ, তাদের কাছে সবচেয়ে কঠোর ও বিরক্তিকর অআর্থিক বাণিজ্য বাধা রয়েছে।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ভারত ও আমেরিকা গত কয়েক মাস ধরে ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের জন্য আলোচনায় লিপ্ত হয়েছে, নয়াদিল্লি সেই লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে চুক্তিতে পৌঁছেছেন। যদিও অনেক চুক্তির বিস্তারিত বিবরণ এখনো অপ্রতুল, হোয়াইট হাউস স্বীকার করেছে যে কিছু চুক্তির জন্য আরও আলোচনার প্রয়োজন।
ট্রাম্প আশাবাদী মন্তব্য করেছেন, চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি হবে, যা একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ১২ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। আমরা চীনের সঙ্গে ভালো করছি। আমার মনে হয় এটি খুব ভালোভাবে কাজ করবে। আমার মনে হয় আমরা চীনের সঙ্গে একটি খুব ন্যায্য চুক্তি করতে যাচ্ছি।