ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এসব হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৩৮৫ জন। এ নিয়ে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৮৯৭ জনে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে শনিবার (১৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা আনাদোলু।

মন্ত্রণালয়ের দৈনিক আপডেট অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭০ জন নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আরও আটজনের মরদেহ। এ সময়ে আহত হয়েছেন ৩৮৫ জন। অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৬০ জনে।

এ ছাড়া, ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে নতুন করে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। এ নিয়ে দুর্ভিক্ষ-সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫১ জনে, এর মধ্যে ১০৮ জনই শিশু।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তীব্র সরঞ্জাম সংকটের কারণে উদ্ধার অভিযান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে বা রাস্তায় পড়ে আছে, ইসরায়েলি বিমান হামলা চলতে থাকায় তাদের উদ্ধারে বড় ধরনের বাধা তৈরি হয়েছে।

গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি ভঙ্গ করে পুনরায় সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৩৬২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৩ হাজার ৬১৯ জন আহত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, যারা মানবিক সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা করছে, ইসরায়েলি বাহিনী এখনও ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ধরনের ঘটনায় ২৬ জন নিহত এবং ১৭৫ জন আহত হয়েছেন।

চলতি বছরের ২৭ মে থেকে মানবিক সহায়তা সংগ্রহে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯২৪ জন নিহত এবং ১৪ হাজার ২৮৮ জন আহত হয়েছেন।

মার্চের শুরু থেকে গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণ অবরোধ করে রেখেছে ইসরায়েল। এর ফলে ২৪ লাখ মানুষের বসতি গাজা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছে। তৈরি হয়েছে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ, রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব।

গত নভেম্বরেই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

এছাড়া ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলা চলছে।