যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সম্মত হামাস-ইসরায়েল : ট্রাম্প

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের বাস্তবায়নে একমত হয়েছে। এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হলো গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা ও জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা। স্থানীয় সময় বুধবার (৮ অক্টোবর) এই ঐতিহাসিক চুক্তির ঘোষণা দেন ট্রাম্প নিজেই। খবর আলজাজিরার।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, আমি অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ইসরায়েল ও হামাস—উভয়ই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে স্বাক্ষর করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও জানান, এই চুক্তির ফলে খুব শিগগিরই হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মিরা মুক্তি পাবে এবং ইসরায়েল নিজেদের সেনাদের নির্ধারণ করা সীমানায় সরিয়ে আনবে।
ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান এবং উপত্যকাটিতে হামাসের হাতে থাকা ৪৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি রয়েছে। যাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের অনেককেই মুক্তি দেওয়া হবে। সমঝোতার বিষয়ে মধ্যস্থতাকারী কাতার পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত জানাবে বলেও জানানো হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় দুই পক্ষের সম্মত হওয়ার পর ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এটি ‘ইসরায়েলের জন্য একটি দারুণ দিন।’
বৃহস্পতিবার দেশটির মন্ত্রিসভা এ পরিকল্পনার অনুমোদন দিতে পারে এবং নেতানিয়াহু নেসেটে (ইসরায়েলের পার্লামেন্ট) ভাষণ দেওয়ার জন্য ট্রাম্পকে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন।
এর আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মিসরে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলা যুদ্ধবিরতি আলোচনায় আলোচকেরা একটি চূড়ান্ত চুক্তির ‘খুব কাছাকাছি’ পৌঁছে গেছেন।

আগামী শুক্রবার ওয়াল্টার রিড মেডিকেল সেন্টারে পূর্বনির্ধারিত বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর আগামী শনি কিংবা রোববার নাগাদ মিসরে যেতে পারেন ট্রাম্প। গত মাসে তিনি গাজা নিয়ে এই ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। বর্তমানে ৪৭ জন জিম্মি রয়েছেন, যার মধ্যে ২৫ জন আর বেঁচে নেই বলে ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে। ওই দিন থেকেই গাজায় টানা নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় অন্তত ৬৭ হাজার ১৭৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ হাজার ১৭৯টি শিশু।