মার্কিন হামলায় বিধ্বস্ত নৌকায় কলম্বিয়ার নাগরিক ছিল, দাবি প্রেসিডেন্ট পেত্রোর

কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো বলেছেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় যে নৌকাটি ধ্বংস হয়েছে, সেটি ছিল কলম্বিয়ার এবং সেখানে কলম্বিয়ার নাগরিকরা ছিলেন। তবে হোয়াইট হাউস এই অভিযোগকে “ভিত্তিহীন” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। খবর বিবিসির।
গত কয়েক সপ্তাহে ক্যারিবীয় সাগরে অন্তত চারটি নৌযানে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ২১ জন নিহত হয়েছেন। ওয়াশিংটন বলছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় এই হামলাগুলো মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়েছে। তবে তারা এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ বা নিহতদের পরিচয় প্রকাশ করেনি, যা নিয়ে লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (৮ অক্টােবর) মার্কিন সিনেটে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এসব সামরিক অভিযান থেকে বিরত রাখার একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হলেও তা অল্প ব্যবধানে নাকচ হয়ে যায়।
এই প্রসঙ্গে মার্কিন সিনেটর অ্যাডাম শিফের এক পোস্টের জবাবে পেত্রো বলেন, “নতুন এক যুদ্ধক্ষেত্র খুলে গেছে — ক্যারিবীয় সাগর।” তিনি আরও জানান, “প্রাথমিক তথ্য বলছে, সর্বশেষ যে নৌকাটি বোমা হামলায় ধ্বংস হয়েছে সেটি কলম্বিয়ার এবং তাতে কলম্বিয়ান নাগরিকরাই ছিলেন। আমি আশা করি নিহতদের পরিবার সামনে এসে বিষয়টি জানাবেন। এটি মাদকবিরোধী যুদ্ধ নয়, এটি তেলের জন্য যুদ্ধ। লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয়ের ওপর এই আগ্রাসন বিশ্বকে থামাতে হবে।”
তবে প্রেসিডেন্ট পেত্রো নিহতদের পরিচয় বা বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি। যুক্তরাষ্ট্রও হামলায় নিহতদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা আশা করি প্রেসিডেন্ট পেত্রো তার এই ভিত্তিহীন ও নিন্দনীয় মন্তব্য প্রকাশ্যে প্রত্যাহার করবেন।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “দুই দেশের মধ্যে কিছু নীতিগত পার্থক্য থাকলেও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কলম্বিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ওয়াশিংটন জানিয়েছে, ২ সেপ্টেম্বর থেকে তারা ভেনেজুয়েলার উপকূলে অবস্থিত এমন কিছু নৌযানকে লক্ষ্যবস্তু করছে যেগুলোতে অবৈধ মাদক বহনের অভিযোগ রয়েছে।
বুধবার সিনেটে ৪৮-৫১ ভোটে নাকচ হওয়া প্রস্তাবটি ছিল ডেমোক্র্যাট সিনেটর অ্যাডাম শিফ ও টিম কেইনের যৌথ উদ্যোগ, যা পাস হলে ট্রাম্পকে এসব হামলার জন্য কংগ্রেসের অনুমতি নিতে হতো।

এর আগে, এই মাসের শুরুতে কংগ্রেসে পাঠানো এক গোপন নথিতে যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে “অ-আন্তর্জাতিক সশস্ত্র সংঘাতে” জড়িত বলে উল্লেখ করে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি যুদ্ধকালীন ক্ষমতা প্রয়োগের আইনি ভিত্তি তৈরি করার প্রচেষ্টা, যাতে “শত্রু যোদ্ধা” হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের হত্যা বৈধ করা যায়, এমনকি তারা সরাসরি কোনো সহিংস হুমকি না দিলেও।
ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে মেক্সিকো, ইকুয়েডর এবং ভেনেজুয়েলার বেশ কয়েকটি কার্টেলকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যার ফলে এসব গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারবে।