গপ্পো তক্ক যুক্তি
‘পথের পাঁচালী’ আবার সম্পাদনা করতে চাই : সত্যজিৎ রায়
বাংলা সিনেমাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। তাঁর মাধ্যমেই সিনেমার আন্তর্জাতিক ময়দানে বাংলা সিনেমার নতুন পরিচিতি সৃষ্টি হয়েছিল। বিদেশি গণমাধ্যম, সিনেমাবোদ্ধা, সাংবাদিক এবং পরিচালকদের আগ্রহের শীর্ষে ছিলেন সত্যজিৎ। প্রায় ৩৫ বছরের ক্যারিয়ারে সত্যজিৎ নির্মাণ করেছিলেন ৩০টির বেশি ছবি। এর মধ্যে পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবির পাশাপাশি ছিল স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি এবং তথ্যচিত্র।
সত্যজিতের ছবি সম্পর্কে জাপানি চলচ্চিত্র নির্মাতা আকিরা কুরোসাওয়া বলেছিলেন, ‘সত্যজিতের সিনেমা না দেখা মানে পৃথিবীতে বাস করে সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয় না দেখা।’
১৯৯২ সালে মারা যান সত্যজিৎ। তাঁর বেশ কিছু বছর আগে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটে দুই মাসব্যাপী সত্যজিৎ রায় রেট্রোস্পেকটিভ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সময় থেকে পরের বছরগুলোতে সত্যজিতের কয়েকটি লম্বা সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন তাঁর আত্মজীবনী ‘সত্যজিৎ রায় : দি ইনার আই’-এর রচয়িতা অ্যান্ড্রু রবিনসন। সেই সাক্ষাৎকার সমগ্রের মধ্য থেকে একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের আর্কাইভে জমা আছে। সেখান থেকে সাক্ষাৎকারটি সংক্ষেপিত আকারে ভাষান্তর করা হলো।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : আপনি কি কখনো বড়লোক (ধনী) হতে চেয়েছিলেন?
সত্যজিৎ রায় : আমার মনে হয়, আমি যথেষ্ট বড়লোক (হাসি)। মানে টাকা-পয়সা নিয়ে আমার তেমন চিন্তা করতে হয় না। আমার লেখালেখি থেকে সেটা আসে, ফিল্ম থেকে নয়। বইগুলো লিখে একটা ধারাবাহিক আয়ের পথ হয়েছে, যেখান থেকে কিছু না কিছু সব সময়ই পাচ্ছি। তবে বোম্বের অভিনেতাদের মতো অত বড়লোক আমি নই। কিন্তু আরামে থাকার মতো পয়সা আমার আছে। অতটুকুতেই আমি খুশি। বই আর রেকর্ড কেনার মতো টাকা পকেটে থাকলেই হলো।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : আর পোশাক কিনতে হয় না? ফিল্মমেকার হিসেবে নিজের একটা ফ্যাশন জিইয়ে রেখে চলতে হয় না, যাতে বাকিরা আপনাকে অনুসরণ করতে পারে?
সত্যজিৎ রায় : আমি কখনো ভাবিনি আমি ফিল্মমেকার হবো। মানুষকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে সেটা বলে দেওয়া, তাদের একটা পথ দেখানো—এগুলো করব, সেটা আমার পরিকল্পনায় ছিল না। স্কুলে আমি খুবই কম কথা বলতাম এবং লাজুক ছিলাম। কলেজ পর্যন্ত একই রকম ছিলাম। এমনকি কোনো পুরস্কার নিতে মঞ্চে উঠতেও হাত-পা কাঁপত। মঞ্চে উঠে কিছু বলতে বললে ভয়ে গলা শুকিয়ে আসত।
কিন্তু ‘পথের পাঁচালী’ (১৯৫৫) করার সময় বুঝলাম, আমার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার মতো ক্ষমতা আছে। নিজের ব্যক্তিত্বকে অন্যদের ওপর প্রতিষ্ঠা করার ক্ষমতা রয়েছে। তার পর পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমার বেশি সময় লাগেনি। একটার পর একটা ছবি করতে থাকলাম, আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল। এমনকি হাজার হাজার মানুষের সামনে কথা বলতেও আর মুখে আটকাত না। মানুষের ভিড়ে দাঁড়িয়ে নিজের কথা বলার মতো সাহস হয়ে গেল। এগুলো করতে পরে আর সমস্যা হয়নি। কিন্তু আমি যে বিষয়গুলো ভালো জানি, সেগুলোর ব্যাপারেই বাকিদের জ্ঞান দিয়েছি, অন্য কিছু নিয়ে নয়।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : ফিল্মমেকার হিসেবে আপনার নৈতিক মনোভাব কী?
সত্যজিৎ রায় : এ ব্যাপারে আমি খুব স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাই না। আমার ছবিগুলোর মধ্যেই ব্যাপারটা আছে। কাউকে সেটা জানতে হলে ছবিগুলো দেখতে হবে এবং সেগুলো পড়তে হবে। আমি কোনো পোশাকি নৈতিক মনোভাব মাথায় নিয়ে ছবি বানাই না। আমার মনে হয়, এগুলো নিয়ে সমালোচকরা কাজ করবেন। এগুলো নিয়ে আলাদা করে ভাবতে ভালো লাগে না।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : কিন্তু আপনার প্রথম ছবি ‘পথের পাঁচালী’ মুক্তি পাওয়ার পর সমাজ এবং মানুষের প্রতি আপনার নৈতিক মনোভাবে কি কোনো পরিবর্তন এসেছে? আপনি কি আরো কঠোর হয়েছেন এসব ব্যাপারে?
সত্যজিৎ রায় : না, সেটার প্রয়োজন হয়নি। তবে চারপাশ সম্পর্কে আমি আরো সচেতন হয়েছি। ছবিতে নামার আগে মনে হয় চারপাশের পরিবেশ থেকে আমি কিছুটা বিচ্ছিন্ন ছিলাম। নিজের আগ্রহের বিষয়গুলো নিয়েই ব্যস্ত থাকতাম। আমার বয়সীরা তখন রাজনীতি নিয়ে আমার তুলনায় অনেক বেশি সচেতন ছিল। আমি সে রকম ছিলাম না, আমি ব্যস্ত থাকতাম আমার বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে। নিজেকে একজন শিল্পী হিসেবে গড়ে তুলছিলাম তখন। শুরু থেকেই শিল্পের বিভিন্ন বিষয়ে আমার আগ্রহ ছিল। আর সে কারণেই আমার মনে হয়েছিল, অন্য কোনো বিষয়ের চাপ আমি আর নিতে পারব না।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : আপনার কি মনে হয়, শিল্পে আলাদা দখল থাকলে রাজনীতি কি সেখানে অপ্রাসঙ্গিক?
সত্যজিৎ রায় : আপনি যদি একজন ফিল্মমেকার হন, তাহলে আপনার আশপাশ, রাজনীতি এবং সমাজের বিষয়গুলো আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। কারণ, এগুলো ফিল্মের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক। ১৯৬০ সালের পর থেকে আমি আশপাশ সম্পর্কে আরো বেশি সচেতন হয়ে উঠি, আর এ রকম অনেক বিষয় আমি ছবিতেও যোগ করেছি। যেগুলো আমি দেখেছি, কিন্তু স্ক্রিপ্টে লেখা ছিল না। ‘সীমাবদ্ধ’ ছবিতে রাজনীতির কোনো বিষয় ছিল না, কিন্তু একটা ককটেল পার্টির ভেতরে বসে বাইরে বোমা ফাটার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল। এবং আওয়াজ শুনে পার্টিতে থাকা লোকজন বোমাবাজি নিয়ে কথা বলছিল নিজেদের মধ্যে। সে রকমই লোডশেডিংয়ের দৃশ্য আছে ছবিটিতে, লিফট আটকে যাওয়ার ঘটনাও রয়েছে। লিফটে কীভাবে আটকে যায় বা কীভাবে কাজ করে, সেটা কিন্তু ছবিটার বিষয়বস্তু ছিল না। এ দৃশ্যগুলো ছবিটিকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ ছবির মূল চরিত্র দুই ভাই, যারা একই ফ্ল্যাটে থাকে। এক ভাই নকশাল, বোমা বানায়। আপনি কি এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মীদের সাহসের প্রশংসা করবেন?
সত্যজিৎ রায় : হ্যাঁ, তাদের সাহসের প্রশংসা করব। কারণ, সে রকম সাহস আমার নেই। বুকে গুলি খেয়ে মরব জেনেও বন্দুকের সামনে দাঁড়ানোর মতো সাহস আমার নেই। নকশাল আন্দোলনের এই ব্যাপারটা আমাকে সব সময়ই খুব অবাক করেছে। ছেলেগুলোর মধ্যে কী পরিমাণ সাহস ছিল, শরীরে তেজ ছিল, কোনো কিছুই ভয় পেত না। আমার মনে হয় না, আমি এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে পারতাম। তাদের সাহসের প্রশংসা সবারই করা উচিত।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : ‘মহানগর’ ছবিতে কলকাতার মধ্যবিত্ত ঘরের এক গিন্নি যখন চাকরি করা শুরু করল সেটা তার পরিবারে কী প্রভাব ফেলে, সেটা দেখানো হয়েছে। ঘরের বউ বাইরে গিয়ে কাজ করছে—মধ্যবিত্ত পরিবারে এটা নিয়ে যে একটা দ্বিধা থাকে, সেটা কি আপনি নিজের পরিবারে দেখেছেন?
সত্যজিৎ রায় : বিয়ের আগে আমার বউ শিক্ষকতার কাজ করত, সেটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : ‘মহানগর’ কি তাহলে আপনার ব্যক্তিগত উপলব্ধির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ছিল?
সত্যজিৎ রায় : নরেন মিত্রের বইটা পড়লে গল্পটার সময় এবং প্রেক্ষাপট যে কেউ ধরতে পারবে। ওই শহরে না থাকলে বাইরে থেকে কেউ এসে ঠিক গল্পটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে না। আপনাকে ওই সমাজ, তাদের আচার-ব্যবহারটা বুঝতে হবে। আমার জন্য ব্যাপারটা সহজ ছিল, কারণ গল্পটাই অনেক কিছু বলে দিচ্ছিল। ছবির অনেক বিষয়ই গল্প থেকে সরাসরি নেওয়া হয়েছে।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : আপনি কি আপনার ছবিগুলোতে একটি ব্যাপার লক্ষ করেছেন? সব ছবিতেই আপনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, পুরুষদের তুলনায় নারীরা মানসিকভাবে অনেক বেশি শক্ত।
সত্যজিৎ রায় : হ্যাঁ। আসলেই তাই। নিজের অভিজ্ঞতায় তা-ই দেখেছি।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : কেন? সে ব্যাপারে কখনো চিন্তা করেছেন?
সত্যজিৎ রায় : আমার মনে হয়, নারীরা শারীরিক দিক থেকে পুরুষের তুলনায় দুর্বল। সেটা তো কোনো কিছু দিয়ে পুষিয়ে নিতে হতো। তাই প্রকৃতি তাদের মানসিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী করে দিয়েছে। আমি কিন্তু শুধু বাঙালি সমাজের কথা বলছি না, সবার ক্ষেত্রেই বলছি, নারীদের কথা বলছি।
এখানে আমি অভিনেত্রী চন্দনা ব্যানার্জির উদাহরণ দিতে পারি। অসাধারণ এক অভিনেত্রী তিনি। ‘তিন কন্যা’ ছবির পোস্টমাস্টার অংশে কাজের মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। তাঁকে খুঁজে পেয়েছিলাম একটা নাচের স্কুলে। কিন্তু তিনি খুব দ্রুত একজন পুরোদস্তুর অভিনেত্রী হয়ে উঠলেন। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে মুখে কোনো চিন্তার ছাপ নেই, ভয় নেই। অত্যন্ত বুদ্ধিমতী, চোখ-কান সব সময় খোলা এবং পরিচালকের খুবই বাধ্য। এ রকম অভিনেত্রী পেলে পরিচালকদের কাজের সুবিধা হয়। পোস্টমাস্টারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অনিল চ্যাটার্জি। তিনি খুব ভয়ে ছিলেন। হলে বসে মানুষ চন্দনার অভিনয় দেখার পর তার অভিনয় দেখে তাদের মন ভরবে না—এ শঙ্কা ছিল তার মনে।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : আপনার ছবিগুলোতে সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা দখল করে আছে। বিশেষ করে পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক।
সত্যজিৎ রায় : এটা আমার বিশেষত্ব বলতে পারেন। জিনিসটা আমার ভেতরে আছে, তাই ছবিগুলোতেও চলে আসে। আমার মনে হয়, আমি মানুষের মনস্তত্ত্ব বুঝতে পারি।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : যেমন ‘শাখা প্রশাখা’ ছবিতে বাবার অসুস্থতা নিয়ে ভাইদের মধ্যে দ্বন্দ্ব?
সত্যজিৎ রায় : রক্তের সম্পর্কের বাইরে যারা আছে, তাদের আপনি অনেক বেশি বুঝতে পারবেন, অনেক বেশি অনুভব করতে পারবেন তাদের অনুভূতিগুলো। এটাই পুরো ছবিতে দেখানোর চেষ্টা করেছি।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : পর্দায় কি সম্পর্কগুলো প্রতিষ্ঠা করা কঠিন?
সত্যজিৎ রায় : একটা ছবির মধ্যে সবকিছুই কঠিন। কোনো কিছুরই কোনো সহজ সমাধান নেই। এর জন্য প্রয়োজন চিন্তা করা এবং সতর্ক পর্যবেক্ষণ। জিনিসগুলোর সঙ্গে সঠিক বোঝাপড়া এবং নিখুঁত হিসাব।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : ছোটবেলায় মামার বাড়িতে যৌথ পরিবারে মায়ের অভিভাবকত্বে বড় হওয়া কি আপনার ছবির মনস্তত্ত্বকে প্রভাবিত করেছে?
সত্যজিৎ রায় : ছোটবেলায় একা থাকার কারণে আমি আমার চারপাশের মানুষ এবং অন্যান্য বিষয় খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতাম। একা মানে আমার আর কোনো ভাইবোন ছিল না। সে কারণে আমি আমার নিজের চিন্তাভাবনাগুলো নিয়েই নিবিষ্ট থাকতাম। এটা যে খুব বুঝেশুনে করতাম, তা নয়। একা একা থাকতে থাকতে আমি এভাবেই ভাবতে শিখেছি। আমার আশপাশে যারা ছিল, তারা সবাই আমার চেয়ে বয়সে বড় ছিল। বাড়িতে আমিই সবার ছোট ছিলাম। তাই নিজের একটা চিন্তার জগৎ তখন থেকেই তৈরি হয়েছিল।
অ্যান্ড্রু রবিনসন : এবার ‘পথের পাঁচালী’র প্রসঙ্গে আসা যাক। এ ছবিটি দেখার পর সমালোচকরা আপনাকে ‘মানবতাবাদী’ তকমা লাগিয়েছেন। এখন কী মনে হয় ছবিটা সম্পর্কে?
সত্যজিৎ রায় : আমি ছবিটা আবার সম্পাদনা করতে চাই। সেটাকে আরো ভালো করতে চাই। আমার মনে হয়, ছবিটা মাঝেমধ্যে ঝিমিয়ে গেছে। তবে সেকেন্ড হাফে ঠিক আছে। আমরা ছবিটা শুরু থেকে ধারাবাহিকভাবে দৃশ্য ভাগ করে শুট করেছিলাম এবং একটা লম্বা সময় ধরে বিরতি নিয়ে শুটিং হয়েছিল। কাজটা করতে করতে আমরা ফিল্ম বানানো শিখেছিলাম। শেষের দিকে কাজগুলো বেশ ভালো হয়েছিল প্রথম দিকের তুলনায়। তাই ছবির সেকেন্ড হাফটা শক্তিশালী। কিন্তু সম্পাদনাটা আবার করলে ছবির মান আরো বাড়বে। এ ছাড়া অন্য যে বিষয়গুলো আছে, সেগুলোর ব্যাপারে তো কিছু করার নেই। যেমন : ক্যামেরার প্লেসমেন্ট। ওটা তো আবার শুট করা যাবে না এত বছর পরে এসে। আবার ছবির মধ্যে যে ছোট তিনটা ঘর দেখানো হয়েছে (অপু যে ঘরগুলোতে বড় হয়েছে), সেই ঘরগুলোর মধ্যে যে সম্পর্ক বা তাদের প্রাসঙ্গিকতা কিন্তু ছবিতে ঠিকভাবে আসেনি। ছবি করার সময় একটা মাস্টার অ্যাঙ্গেল নিয়ে আগাতে হয়, যেটাকে বারবার দেখাতে হয়, যাতে দর্শকের মনে একটা স্থায়ী প্রভাব পড়ে। বারবার ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল বদলানো হলে দর্শক বিভ্রান্তিতে পড়েন। আমাদের মাথায় গল্পটা খুব ভালোভাবে ছিল। কিন্তু সেটা পর্দায় তুলে আনার জন্য কিছু কৌশল এবং যন্ত্রপাতির দরকার ছিল। সে সময় আমরা সবাই ছিলাম আনকোরা, যন্ত্রের ব্যবহারটা ঠিকঠাক জানতাম না।