১ ও ২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩৬ তম জাতীয় কবিতা উৎসব
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/01/20/415693851_358439563717325_8417620924244701259_n.jpg)
পূর্ববর্তী বছরের ন্যায় এবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাতীয় কবিতা উৎসব। এবারের ৩৬ তম জাতীয় কবিতা উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি। জাতীয় কবিতা পরিষদের এ আয়োজনে এবারের স্লোগান—‘যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা ’। ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের কবিরা এবারের উৎসবে অংশ নেবেন।
এছাড়াও অনলাইনের মাধ্যমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত হতে যুক্ত হবেন অন্যান্য দেশের বিখ্যাত কবিরা। উৎসবে 'জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার' প্রাপ্ত কবির নাম ঘোষণা করা হবে। এবং সামনেরবার সে পুরস্কার হাতে তুলে দেওয়া হবে।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) দ্বিতীয় তলায় উৎসব দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয় কবিতা পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের শীর্ষ নেতারা জানান, বরাবরের মতোই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারসংলগ্ন চত্বরে (হাকিম চত্বর) এবারের জাতীয় কবিতা উৎসবের আয়োজন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত। এতে বলা হয়, ‘ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারসংলগ্ন চত্বরে ৩৬ তম জাতীয় কবিতা উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া জাতীয় কবিতা উৎসব ও জাতীয় কবিতা পরিষদের নিরন্তর সংগ্রামের ইতিহাস কারও অজানা নয়। আমরা অব্যাহতভাবে স্বৈরাচার, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কথা বলে এসেছি। কবিদের দ্রোহের স্ফুলিঙ্গ থেকে জন্ম নিয়ে এ উৎসব জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক উৎসবে রূপ নিয়েছে।
বাংলাদেশের কবিরা চিরকালই প্রগতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। বিগত প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও ভাষার সংগ্রামী কবিরা এ উৎসবে আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মানুষের মুক্তির কথা বলেছেন। এ উৎসবকে আমরা কবিতার মিলনমেলায় পরিণত করতে পেরেছি।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘আজ যখন পৃথিবীর দেশে দেশে অশুভ শক্তির দাপটে নিরপরাধ মানুষ বিপন্ন। নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষের লাশের স্তূপের উপর ক্ষমতার অহমিতা দেখাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি। তখন আমরা বাংলাদেশের কবিরা এবং আরো বেশ কয়েকটি দেশের কবি ও কবিতা প্রেমীরা একত্রিত হয়ে এই উৎসবের যুদ্ধ ও গণহত্যা সহ সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো। দু' দিনব্যাপী এ উৎসবে কবিতাপাঠ, নিবেদিত কবিতা, সেমিনার, আবৃত্তি ও সংগীতের মধ্য দিয়ে আমরা এ স্লোগানকে মূর্ত করে তুলব।'
এবারও বিভিন্ন দেশ ও ভাষার কবিদের উৎসবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ভারতের বিভিন্ন ভাষার বেশ কয়েকজন বরেণ্য কবি তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে।
আগমন নিশ্চিত করা কবিদের মধ্যে কয়েকজন হলেন: ভারতের কলকাতা থেকে সুবোধ সরকার, বিথী চট্টোপাধ্যায়, বিভাস রায় চৌধুরী, ভারতের আগরতলা হতে রাতুল দেব বর্মন, দীলিপ দাস, আকবর আহমেদ, আসামের কবি অনুভব তুলাসি, চন্দ্রিমা দত্ত,
ফিলিপাইনের কবি ও বর্তমানে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আসান জুনিয়র, নেপালের চাবিলাল কপিলা।
এছাড়াও 'যুদ্ধ গণহত্যা সহেনা কবিতা' এই মর্মবাণীর প্রতি সংহতি জানিয়ে কায়রো আন্তর্জাতিক বই মেলা থেকে সরাসরি অনলাইনে সংযুক্ত হবেন আরব বিশ্বের খ্যাতিমান কয়েকজন কবি। তারা হলেন: মিশরের আহমেদ আল ছাহহে, ইব্রাহীম আল মাশরি, ড. সারা হামিদ হাওয়াস, ইরাকের ড. আলী আল সালাহ, জার্মান কবি টরিয়াস বার্গার্ট, আর্জেন্টিনার কবি জনা বার্গার্ট এছাড়াও পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আরও অনেক কবি যুক্ত হতে পারেন এ আয়োজনে।
এবারের মর্মবাণী 'যুদ্ধ গণহত্যা সহে না কবিতা' দ্বারা কী বার্তা দিতে চান সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো- ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, আমরা সবসময়ই শান্তির পক্ষে। জাতীয় কবিতা পরিষদের সূচনাই হয়েছিল সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিগর্ভা থেকে। গোয়েরিকা থেকে শুরু করে পাবলো পিকাসো পর্যন্ত সারা পৃথিবীর শিল্পীরাই শান্তির পক্ষে। তবুও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, গাজায় নিরীহ মানুষের উপর হামলাসহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ধ্বংসযজ্ঞ আমরা প্রতিনিয়তই দেখছি। ছোট দেশ হিসেবে আমরা এই মর্মবাণীর মাধ্যমে এসব ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাই। এবং এ প্রতিবাদ "পৃথিবীর দেশে দেশে ছড়িয়ে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি"।
সংগঠনটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সেমিনার বিষয়ক সম্পাদক, সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, দপ্তর সম্পাদক, সংগঠনের কর্মী ও অন্যান্য কবিরা এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।