এনজিওকর্মীর কবজি কেটে টাকা ছিনতাই : দুই নারীসহ গ্রেপ্তার ৪
নরসিংদীতে এনজিওকর্মীর হাতের কবজি কেটে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুই নারীসহ চারজন গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে জেলার মাধবদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া টাকা ও ভিকটিমের মোবাইল ফোনসেট জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. রুবেল মিয়া (২৬), বাদশা মিয়া (২২), মাহবুবা আক্তার মেরিনা (২২) ও মিঠি বেগম (২৬)।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম। তিনি জানান, গত ১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে এনজিওকর্মী শান্তা আক্তার শহরের পশ্চিম কান্দাপাড়া এলাকা থেকে ঋণের কিস্তির টাকা আদায় করে বাজির মোড়ের অফিসে ফিরছিলেন। এ সময় রুবেল মিয়া ও বাদশা মিয়া পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পশ্চিম কান্দাপাড়ার সরকারি মহিলা কলেজের সামনে ওত পেতে থাকে। ওই এনজিওকর্মীর রিকশার গতিরোধ করে তাঁর টাকাভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ছিনতাইকারী রুবেল। তখন এনজিওকর্মী তাঁর টাকার ব্যাগটি না ছাড়লে রুবেলের সহযোগী বাদশা মেয়েটির বাম হাতের কবজিতে কোপ দেন। পরে তাঁর কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন হলে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যান রুবেল ও বাদশা। এরপর নরসিংদী সদর থানার ব্রাহ্মণপাড়ায় রুবেলের শ্বশুরবাড়িতে আত্মগোপন করেন। তাঁরা সেখানে ওই এনজিওকর্মীর ব্যাগটি আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। এদিকে ওই ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে এবং তা সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, এ ছিনতাইয়ের ঘটনায় আশা এনজিওর ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ইসমাইল শিকদার বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন অনুসন্ধান চালায়। গতকাল দিবাগত রাত ৩টার দিকে জেলার মাধবদী থানার ঢাকা-সিলেট হাইওয়ের মাধবদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি রুবেল মিয়া ও বাদশা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকার খাদিমাচরে অভিযান চালিয়ে সহযোগী মাহবুবা আক্তার মেরিনাকে রাত সাড়ে ৩টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ছিনতাইয়ের নগদ এক লাখ ৯১ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়। পরে মেরিনার তথ্যে সদর থানার ব্রাহ্মণপাড়া এলাকা থেকে অপর সহযোগী মিঠি বেগমকে রাত সাড়ে ৪টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর হেফাজত থেকে রুবেলের একটি গেঞ্জি, বাদশার টুপি ও ভিকটিমের মোবাইল ফোনসেট জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি মো. রুবেল মিয়া ও বাদশা মিয়া ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
র্যাব কর্মকর্তা আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃত সবাই পেশাদার ছিনতাইকারী এবং বিভিন্ন অসামাজিক ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তাঁদের মধ্যে রুবেলের নামে চারটি, বাদশার নামে আটটি এবং মিঠি বেগমের নামে দুটি মামলা চলমান রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের নরসিংদী সদর মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।