মায়ের মরদেহ শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন খুলনার মরিয়মদের
ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার মরদেহটি খুলনা থেকে নিখোঁজ রহিমা বেগমের বলে দবি করেছেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। মরদেহের পোশাক দেখে প্রাথমিকভাবে এটি মায়ের মরদেহ বলে শনাক্ত করেছেন মরিয়ম ও তাঁর দুই বোন। ফুলপুর থানায় পৌঁছে তাঁরা ডিএনএ পরীক্ষার আবেদনও জানিয়েছেন।
জানা গেছে, প্রায় এক মাস আগে গত ২৭ আগস্ট খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা এলাকার খানাবাড়ি থেকে নিখোঁজ হন গৃহবধূ রহিমা খাতুন। রহিমা খাতুন নিখোঁজের পর দৌলতপুর থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও পরে ২৮ আগস্ট অজ্ঞাতদের নামে মামলা করেন মেয়ে আদুরী আক্তার (মরিয়মের বোন)। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে নিখোঁজ মায়ের সন্ধান চেয়ে মেয়েরা ৩১ আগস্ট খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তারা বলেন, ‘তাদের বাড়ি ও জমি দখলের জন্য একটি মহল অনেকদিন ধরে তৎপর রয়েছে। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে রহিমা খাতুনকে গুম করা হয়েছে। নিখোঁজ মায়ের উদ্ধারের দাবিতে পুলিশ ছাড়া র্যাবের কার্যালয়েও গিয়েছিলেন তারা।’
এসব ঘটনার পর গত ১০ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বহরদার বাজারে অজ্ঞাতপরিচয় নারীর বস্তাবন্দি গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুদিন পর ১২ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে মরদেহটি দাফন করা হয়। এর আগে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় আলামত সংরক্ষণ করা করা হয়।
পরে মরিয়ম ও তার দুই বোন খুলনা থেকে ফুলপুর থানায় পৌঁছে ওই নারীর মরদেহে থাকা পোশাক দেখে তাদের মা বলে দাবি করেন। এরপর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আবেদন জানান।
ফুলপুর পুলিশের কাছে মরিয়ম মান্নান বলেন, ‘দৌলতপুর থানার ওসি নজরুল সব জানেন। আমার ছোট বোনকে থানায় হেনস্তা করা হয়েছে। থানার ওসি বলেছেন, আমার মা নাকি আত্মগোপন করেছেন। থানায় মামলা হওয়ার আগেই মামলা মাটিচাপা দিয়েছে।’
খুলনার দৌলতপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই মেয়ে আমাকে দোষারোপ করছে জানি। নিখোঁজ নারীর মেয়ে আদুরী আক্তার কারও নাম না উল্লেখ করে একটি এজাহার দিয়েছিল। সন্দেহ হওয়ায় তাঁর বাবা বিল্লাল হোসেন হাওলাদারসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি এখন তদন্ত করছে খুলনা পিবিআই। আমাকে কেন দোষারোপ করা হচ্ছে, আমি জানি না।’
ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন, ‘মরিয়ম মান্নানের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনেছি। তবে, ডিএনএ টেস্টের আগে উদ্ধার করা মরদেহের পরিচয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না। এজন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
ডিএনএ নমুনা রেখে মরদেহ দাফন হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।