সাভারে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু, স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রেপ্তার
সাভারের শাহীবাগ এলাকায় এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহত গৃহবধূর নাম সুমাইয়া আক্তার। হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী সাকিব, শ্বশুর খবির উদ্দিন মাতবর (৭০) ও শাশুড়ি রুনা বেগমকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা সবাই সাভার পৌর এলাকার শাহীবাগ মহল্লার আব্দুল জলিলের বাড়ির ভাড়াটিয়া।
নিহতের স্বজনরা জানান, এক বছর আগে সাকিবের সাথে ফেসবুকে পরিচয় সুমাইয়ার। পরে প্রেম ও বিয়ে করে দু’জন। এর কিছুদিন পরই মা ও বাবার পরামর্শে সুমাইয়াকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে সাকিব। এছাড়া তার ভরণ-পোষণও বন্ধ করে দেয়া হয়। এসব নিয়ে স্বামী ও তার পরিবারের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হত ওই গৃবধূর। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গতরাতে নিজের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে সুমাইয়া। পরে শ্বশুর বাড়ির লোকজন উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ীর নামে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন নিহতের বাবা ইসমাইল হোসেন।
অন্যদিকে সুমাইয়ার চাচা মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, মা বিদেশে থাকার সুযোগে সুমাইয়াকে ফুঁসলিয়ে বিয়ে করে সাকিব। ছেলের ব্যাপারে আপত্তি থাকলেও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিয়ে মেনে নেন তারা। সাকিবকে এ পর্যন্ত সাড়ে তিন লাখ টাকা যৌতুক দেন বলেও দাবি তার। ইদানিং সাকিব ব্যবসার কথা বলে আরও ৭০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে। তা দিতে অস্বীকার করায় সুমাইয়াকে প্রায়ই মারধর ও নির্যাতন করা হত বলেও অভিযোগ করেন তিনি। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন থাকায় এটিকে হত্যা বলে সন্দেহ করছেন সুমাইয়ার স্বজনরা। তাদের দাবি ঘটনা আড়াল করতে মৃতদেহ ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা চলছে।
সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হাসান শিকদার জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে পাঠানোর কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।