আদালতে কুকুর আতঙ্ক!
রোববার দুপুর ১২টা। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পঞ্চম তলায় হাজিরা দিতে এসেছেন জোসনা নামের এক নারী। সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময়ে হঠাৎ ভয়ে আঁতকে উঠলেন তিনি। এক পর্যায়ে ভয়ে চিৎকার দিলেন। দেখা গেল আসামিদের রাখার জন্য পরিত্যক্ত হাজতখানার গেটে একটি কুকুর। হাজতখানার গেটে সাঁটানো আছে ‘কুকুর হইতে সাবধান, ভেতরে কুকুর ও কুকুরের বাচ্চা আছে। যেকোনো সময় কুকুর কামড় দিতে পারে ।’
জোসনার মতো অনেক আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীর মধ্যে কুকুরের আতঙ্ক দেখা গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ৫ম তলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫, ৬, ৯ রয়েছে। এ ছাড়া বিশেষ জজ ৫, পরিবেশ আপিল আদালত, দ্রুত বিচার আদালতের এজলাস রয়েছে। এসব আদালতে প্রতিদিন হাজারো বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী, বিচারক, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আসতে হয়। কিন্তু আদালতগুলোর প্রবেশমুখে কুকুর থাকা নিয়ে অনেকের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জোসনা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আজ নারী ও শিশু আদালতে একটা হাজিরা দিতে আসছি। আদালতে উঠার সময় দেখি একটা কুকুর। আদালতের এমন জায়গায় কুকুর দেখে হঠাৎ ভয় পেয়ে গেছি।’
জোসনা বলেন, ‘আদালতের মতো জায়গায় এভাবে কুকর থাকা সবার জন্য বিপজ্জনক। যেকোনো সময় কামড় দিতে পারে এই কুকুর।’
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-৯ নং আদালতের কর্মচারী মোহাম্মদ সবুজ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের এজলাসের পাশেই পরিত্যক্ত রুমে এ কুকুর রাখা হয়েছে। যেকোনো সময় কুকুর এজলাস চলাকালীন চলে আসে। শুনেছি অনেকে কামড় খেয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনোভাবে নজর দিচ্ছে না।’
নাজিম নামের এক বিচারপ্রার্থী বলেন, ‘গত বুধবার তিনি আদালতের একটি মামলায় হাজিরা দিতে এসেছিলেন। জরুরি মোবাইল ফোন আসায় তিনি পরিত্যক্ত গারদ রুমে নিরিবিলি কথা বলতে যান। ভেতরে গিয়ে হঠাৎ কুকুর তাঁকে ধাওয়া করে। পরে তিনি কোনো রকমে নিচে নেমে যান।’ তিনি বলেন, ‘আদালতের মতো জায়গায় এভাবে কুকুর রাখা বিপজ্জনক। অনেকে ছোট শিশু মা-বাবার সঙ্গে আদালতে আসে। যেকোনো সময় তারা ভুলে বা না জেনে রুমে ঢুকে যেতে পারে।’
আবুল কালাম আজাদ নামের এক আইনজীবী জানান, আদালতের ৫ম তলায় পুরাতন হাজত খানায় এমনভাবে কুকর থাকাটা অনেক রিস্ক। কর্তৃপক্ষের অবেহেলার কারণে অনেকে কুকুরের কামড় খেতে পারে। এ ছাড়া এজলাস চলাকালীন কুকুর ভিতরে গেলে বিচারকাজে বাধা হতে পারে। জরুরি ভিত্তিতে সিটি করপোরেশনের উচিত এ কুকুরগুলো বাচ্চাসহ অপসারণ করা।