ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ নরসিংদীর সাত যুবক, বাড়িতে আহাজারি
সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় ট্রলারডুবিতে নরসিংদীর সাত যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। সম্প্রতি দালালের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। গতকাল শুক্রবার (১১ আগস্ট) দিনগত রাতে এ যুবকদের নিখোঁজের খবর তাদের বাড়িতে পৌঁছলে পরিবারের সদস্যদের কান্নার রোল পড়ে। নিখোঁজ প্রত্যেকেই নরসিংদীর বেলাব উপজেলার বাসিন্দা।
নিখোঁজ সাত যুবক হলেন—বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের কাঙ্গালিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মোখলেছুর রহমান (২০), একই এলাকার মৃত হাছেন আলীর ছেলে কামাল হেসেন (৩৪), ভাটের চর গ্রামের হাসান উদ্দিনের ছেলে মাসুদ রানা (২২), দুলালকান্দি গ্রামের হারুন রশিদের ছেলে মনির হোসেন (২২), একই এলাকার আব্দুল মোতালিব মিয়ার ছেলে রবিউল (৩৩), টান লক্ষ্মীপুর গ্রামের মহরম আলীর ছেলে স্বাধীন মিয়া (২০) ও নিলক্ষিয়া গ্রামের আমান মিয়া (২১)।
নিখোঁজ কামাল মিয়ার ছোট ভাই জামাল মিয়া বলেন, ‘নিখোঁজরা ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা খরচ করে দুলালকান্দি গ্রামের জাকির হোসেন ও শাহিনুর নামে দুই দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে ইতালি যেতে চেয়েছিল। তারা গত পাঁচ থেকে ছয় মাস আগে দেশ ছাড়েন। বেশ কিছুদিন তাদের লিবিয়ায় রাখা হয়। গত বুধবার (৯ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে ওই সাত যুবকসহ ২০ জন ডিঙ্গি নৌকায় করে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেন। কিন্তু, ৪০ মিনিট পর ডিঙ্গি নৌকা ডুবে যায়। জাকিরের তত্ত্বাবধানে ১৩ জন ফিরে এলেও সাতজন সমুদ্রে নিখোঁজ হয়েছেন। জাকির হোসেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মিলনের মাধ্যমে এ তথ্য আমাদের জানায়। নিখোঁজদের মধ্যে আমার ভাইও রয়েছে।’
এদিকে, লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ হওয়ার খবরে জাকির হোসেন ও শাহিনুরের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছে।
দুলালকান্দি গ্রামের বর্তমান ইউপি সদস্য মিলন বলেন, ‘নিখোঁজের খবর পেয়ে দালাল জাকিরের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তখন অন্য একজন রিসিভ করে আমাকে জানান, জাকির হোসেনের সঙ্গে থাকা ২০ জনের মধ্যে ১৩ জন উদ্ধার হলেও সাতজনের কোনো খোঁজ পাওয় যায়নি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা জান্নাত তাহেরা বলেন, ‘নিখোঁজদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। নিখোঁজের বিষয় জানতে প্রবাসী ও বৈদেশি কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’
বেলাব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তানভীর আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। এখনও কোনো অভিযোগ আসেনি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।’