গোমস্তাপুরে বর্ষাকালে ‘রয়েল রেড’ জাতের তরমুজ চাষে সাফল্য
সাধারণত গ্রীষ্মকালে তরমুজের দেখা মিললেও, এবার বর্ষাকালেও তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকরা। গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড ‘রয়েল রেড’ জাতের কালো তরমুজ চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন স্থানীয় কৃষকরা। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সহায়তায় এই অসময়ের ফলন স্থানীয় কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নে প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে এই তরমুজের চাষ হচ্ছে। কৃষকরা মালচিং ও মাচা পদ্ধতি ব্যবহার করে এই তরমুজ চাষ করছেন, যেখানে কালো রঙের লম্বাটে আকৃতির তরমুজগুলো ঝুলে থাকে। দেখতে আকর্ষণীয় এবং স্বাদে সুমিষ্ট হওয়ায় এই তরমুজ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে বেশ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন আশপাশের এলাকার অনেক কৃষক এই ক্ষেত দেখতে আসছেন, যা নতুন উদ্যম তৈরি করছে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ‘রয়েল রেড’ জাতটি ভাইরাস সহনশীল এবং মাত্র ৬০-৬৫ দিনের মধ্যেই ফসল তোলা যায়। বর্ষাকালে প্রতিটি তরমুজের গড় ওজন ৩-৫ কেজি হলেও শীতকালে মাটিতে চাষ করলে ফলন আরও বেশি হয়। মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করলে ফলন ও গুণগত মান দুটোই উন্নত হয়।
রাধানগর ইউনিয়নের রুকুনপুর গ্রামের নগরপাড়া বিলে শাহিন আলম, আওয়াল আলী, আজিমুল, নূরজামাল, রায়হানসহ প্রায় ৯ জন কৃষক এই ৫০ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। কৃষক শাহিন আলম জানান, তিনি মালচিং পদ্ধতিতে কোনো রাসায়নিক সার বা বালাইনাশক ছাড়াই তরমুজ চাষ করেছেন। বাজারে প্রতি কেজি ৫০-৬০ টাকা দাম পেলে তার এই চাষ অত্যন্ত লাভজনক হবে।
অপর এক কৃষক আজিমুল বলেন, মাত্র তিন মাসে এক বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করে খরচ বাদে প্রায় এক লাখ টাকা আয় হয়েছে। তিনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মু. গানিউল ইসলাম জানান, তারা নিয়মিত কৃষকদের জমিতে গিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন এবং কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত প্রেসক্রিপশন দিয়ে সহায়তা করছেন।
গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাকলাইন হোসেন বলেন, অসময়ে এই তরমুজ চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা এতে আগ্রহী হচ্ছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামীতে এর চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে। এই নতুন জাতের তরমুজের ভালো দাম পাওয়ায় বাজার নিয়ে কোনো সমস্যা নেই এবং উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত আছে।

শাহিন আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ (গোমস্তাপুর-ভোলাহাট)