দেশের ৪০ শতাংশ মাছের চাহিদা পূরণ করছে রাজশাহী : মৎস্য উপদেষ্টা
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ময়মনসিংহে বেশি মাছ চাষ হলেও রাজশাহীর অবদানও কম নয়। রাজশাহী থেকে সারাদেশে প্রায় ৪০ শতাংশ মাছ সরবরাহ করা হচ্ছে।
আজ শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে মৎস্য অনুষদ আয়োজিত আন্তর্জাতিক মৎস্য সম্মেলন এবং প্রদর্শন- ২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ফরিদা আখতার বলেন, বাংলাদেশে মাছ উৎপাদন দুইভাবে হয়ে থাকে। একদিকে নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাঁওড় থেকে; অপরদিকে মৎস্য চাষের মাধ্যমে। দুটো পদ্ধতিই গুরুত্বপূর্ণ। মৎস্য চাষ নিজের গুণেই এগিয়ে যাচ্ছে। অ্যাকুয়াকালচারের মাধ্যমে মৎস্য চাষের কারণে বাজারে মাছের সরবরাহ বেড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ সাশ্রয়ী দামে মাছ খাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। তার মানে এই নয় যে, আমরা প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত মাছ ধরবো না, খাবো না।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, মাছ রপ্তানি হতেই হবে। যেসব দেশে মাছ রপ্তানি করবেন, সেসব দেশেও বাঙালি আছে। আপনার এই মাছটি তারাই খাবে। প্রবাসীরা কষ্ট করে আমাদের রেমিট্যান্স পাঠায়, অথচ তারা যদি মাছ না পায় সেটা দুঃখজনক ব্যাপার। আমি মনে করি, আমাদের রপ্তানির সুযোগ অবশ্যই তৈরি করতে হবে। এ সময় তিনি কার্পজাতীয় মাছের রপ্তানি বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মৎস্যচাষের ফিড নিরাপদ কিনা-এ প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, মাছচাষ করতে গিয়ে নিরাপদ ফিডের প্রয়োজন হয়। ফিড যদি নিরাপদ না হয়, তাহলে যে মাছটা উৎপাদিত হচ্ছে সেটা ভোক্তার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে। তাই অনিরাপদ ফিড যাতে বাজারে না আসে সেদিকে নজর রাখতে হবে। নিরাপদ ফিডের পাশাপাশি মাছের জন্য নিরাপদ ওষুধও নিশ্চিত করতে হবে।
মাছ উৎপাদনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত কপ সম্মেলনেও সারাবিশ্বে মাছ উৎপাদন নিয়ে উদ্বেগ দেখা গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে, বিশেষ করে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় পুকুরের মাছগুলো বেশি তাপ সহ্য করতে না পেরে মারা যাচ্ছে। তাই সেটার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে কী প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা শিখতে হবে এবং মাছকে বাঁচার মতো পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদের ডিন ও সামিট আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান মণ্ডলের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. মো. আক্তার হোসেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. আ. ন. ম. বজলুর রশীদ এবং মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ। অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব। এ সময় রাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মৎসচাষি এবং সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আবু সাঈদ রনি, রাজশাহী (সদর-গোদাগাড়ী-পবা)