লাইফ চেঞ্জিং অভিজ্ঞতা, সারা জীবন লালন করব

জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি আয়োজিত ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগিতা ‘আলো ছড়াবে উপস্থাপনায়’ চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জয়া সাহা। মমতাজ হারবাল প্রোডাক্টস নিবেদিত দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত উপস্থাপক খোঁজার এ প্রতিযোগিতায় ৭৫জন প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন হন জয়া। এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত জয়া কথা বলেছেন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে।
অডিশন ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে কিছু বলেন
জয়া : অডিশনের অভিজ্ঞতাটা ছিল অনেকটা মিশ্র। এক্সাইটমেন্ট এবং নার্ভাসনেস দুটোই কাজ করছিল। আমিও প্রথমে ওয়েটিংয়ে ছিলাম এবং দেখলাম ওয়েটিং থেকে সিলেক্টেড হয়ে গেছি। তখনও ভাবিনি এতো দূর আসতে পারব।
অনুষ্ঠানটি ১২ পর্বে সাজানো ছিল। আপনার কোন পর্বটি বেশি ভালো লেগেছে?
জয়া : অনুষ্ঠানের ১২টি পর্বের মধ্যে প্রত্যেক পর্বেই ছিল ভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা। প্রতিটি পর্বেই ছিল শেখার নতুন কিছু। তবে আমার পছন্দের পর্বটি ১২তম পর্ব অর্থ্যাৎ সেমিফাইনাল রাউন্ড। সেখানে প্রতিযোগিদের টাস্ক দেওয়া হয়েছিল এটিভি আয়োজিত কমেডি শো ‘হা-শো’ হোস্ট করার জন্য। মানুষকে হাসানো খুব কঠিন কাজ এবং এমন শো হোস্ট করার অভিজ্ঞতাও ছিল একদমই নতুন। তাই অনেকটা ভয় কাজ করলেও কাজটা সহজ হয়ে গিয়েছিল ‘হা-শো’ সিজন ২ এর চ্যাম্পিয়ন তারেক মাহমুদ ভাইয়ার জন্য। তিনি সে পর্বে আমার সঙ্গে পারফর্ম করেছিলেন। সবার উৎসাহে এবং বিচারকদের সুন্দর কমপ্লিমেন্টে দুর্দান্ত এক অভিজ্ঞতা হয়েছিল সেদিন।
সারা দেশ থেকে মোট ৭৫ জন প্রতিযোগী ছিল। যাদের মধ্যে আপনি একজন, এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন?

জয়া : আমার কাছে উপস্থাপনা বরাবরের মতোই ভালোবাসার বিষয়। কলেজ জীবন থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করার অভিজ্ঞতা ছিল। এটির পরিপূর্ণতা এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে। কখনো ভাবিনি এমন একটা রিয়েলিটি শো হবে যেখানে থাকবে আমাদের মতো উপস্থাপকদের নিয়ে আয়োজন। তাই এনটিভিতে এমন কিছু যেখানে দেশের সেরা সকল মানুষেরা এতো এতো ভিডিওর মধ্যে আমার ভিডিও সেরা ৭৫ ভিডিওর মধ্যে থাকবে, এই ব্যাপারটি ছিল অত্যন্ত আনন্দের।
সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ও প্রযুক্তির এ যুগে আপনি উপস্থাপক হতে চেয়েছেন, আপনি নিজেকে কীভাবে দেখতে চান?
জয়া : আমি মনে করি এখন আমার শেখার সময় এবং এই শেখার প্রক্রিয়াটা থাকবে চলমান। আমি আমার সিনিয়র এবং দেশের সকল গুণী উপস্থাপকদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত হই এবং নতুন কিছু শিখছি। এক সময় নিজেকে একজন দক্ষ, সচেতন উপস্থাপক হিসেবে দেখতে চাই।
আপনার শিক্ষা জীবন ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কিছু বলেন
জয়া : আমি ২০২৩ সালে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ফার্মেসি ডিপার্টমেন্ট থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছি। শিক্ষাজীবনে আমি ছোটবেলা থেকেই এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। ছোটবেলা থেকেই আমার মা আমাদের পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ, গান, আবৃত্তি শেখানোর প্রতি সচেতন ছিলেন। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই আমি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতাম। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিভিন্ন ক্লাব অ্যাকটিভিটিজের সঙ্গেও জড়িত ছিলাম।
উপস্থাপক হিসেবে আগামী দিনে আপনি কী ভাইরাল উপস্থাপক হতে চান?
জয়া : একজন উপস্থাপকের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে তার শো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে তাকে সাকসেসফুল করা। আমি একজন দক্ষ উপস্থাপক হিসেবে নিজেকে দেখতে চাই এবং অবশ্যই দর্শকদের ভালোবাসা পেতে চাই। আমি বিশ্বাস করি, কাজের প্রতি একাগ্রতা থাকলে আপনি জনপ্রিয়তা ও সম্মান দুটোই পাবেন। তাই একজন ভাইরাল উপস্থাপক নয়, আমি আমার দর্শকদের কাছে একজন প্রিয় উপস্থাপক হিসেবে নিজেকে দেখতে চাই।
এ অনুষ্ঠানের ভালো-খারাপ দিক কী?
জয়া : আলো ছড়াবে উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের কাছে আমাদের হারানোর কিছুই ছিল না, তবে পেয়েছি অনেক কিছু। আমাদের মতো নতুনদের জন্য এতো বড় প্ল্যাটফর্ম করে দেওয়ার জন্য এবং এতো সুন্দর চিন্তার জন্য এনটিভি এবং আমাদের শো’র এর ডিরেক্টর কাজী মোহাম্মদ মোস্তফা স্যারের প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ।
এ অনুষ্ঠানে আপনার স্মরণীয় স্মৃতি কী?
জয়া : এই অনুষ্ঠানের প্রত্যেকটি দিনই স্মরণীয়। সারাজীবন মনের মধ্যে লালন করব এই ‘লাইফ চেঞ্জিং অভিজ্ঞতা’। কখনোই ভাবিনি এতোদূর আসা হবে। এখানে এসে প্রিয় বিচারকদের নির্দেশনা অনুয়ায়ী শিখেছি নতুন কিছু, প্রিয় মেন্টররা পাশে ছিলেন সবসময়। এই অভিজ্ঞতাগুলো দারুণ। তবে অবশ্যই শ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা ছিল তখন, যখন আমাদের শো এর হোস্ট ফারজানা বিথি আপু ঘোষণা করলেন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আমার নাম। সবার উচ্ছ্বাস, বাবা মায়ের মুখে হাসি দেখে মনে হয়েছিল সত্যিই এ আমার শ্রেষ্ঠ অর্জন।