অবাঞ্ছিত লোমের কারণ কী?
অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যায় অনেকেই ভোগে। অতিরিক্ত লোম হওয়াকেই অবাঞ্ছিত লোম বলা হয়। এ সমস্যার কারণ কী?
এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. ঝুমু খান। বর্তমানে তিনি নিজ প্রতিষ্ঠান ডা. ঝুমু খানস লেজার মেডিকেলের পরামর্শক। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানের ৩৬৬০তম পর্বে সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়।
প্রশ্ন : অবাঞ্ছিত লোমের কারণ কী?
উত্তর : অবাঞ্ছিত লোম হলো, যেটি আমার পছন্দ নয়, সেটি। আজকাল এই সমস্যা বেড়েছে। এখন দেখা যায়, ৭০ ভাগ মানুষের মুখে এই অবস্থা। এটা নিয়ে খুবই বিব্রত হতে হচ্ছে। এর প্রধান কারণ হলো, হরমোন। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা। এর মানে আমি এমন কিছু করছি যে আমার শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ভারসাম্য ফিরে আসলে দেখা যায়, হরমোন ঠিকঠাক চলছে। কিন্তু লোম চলে আসছে। খুব কম কেসে দেখা গেছে সে (রোগী) প্রাকৃতিকভাবে এখান থেকে মুক্তি পাচ্ছে।
অবাঞ্ছিত লোমের বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা হলো, লেজার। লেজার দিয়ে একদম গোড়া থেকে আমি লোমগুলো নষ্ট করে দিতে পারি। এ ক্ষেত্রে আমরা এনডিয়াক লেজার ব্যবহার করি, আইপিএল ব্যবহার করি। তবে আমাদের দেশে যে ধরনের লোম দেখি, এখানে লংপালস এনডিএস ভালো কাজ করে।
প্রশ্ন : হরমোনের ভারসাম্য ঠিক করার জন্য আসলে কী করণীয়?
উত্তর : এর জন্যই আসলে ডাক্তার দেখাতে হয়। বয়ঃসন্ধিকালে যখন হালকাভাবে সমস্যা আরম্ভ হয়, মেয়েরা লুকিয়ে লুকিয়ে টুইজার দিয়ে উঠিয়ে ফেলল, অথবা পার্লারে গিয়ে উঠিয়ে ফেলল। দেখা গেল, একদম মোটা মোটা দাড়ি-গোঁফের মতো হয়ে গেল। একজন কিশোরের মতো। সে বুঝতে পারে না যে এই অবস্থায় তার কোথায় যেতে হবে। আসলে এই অবস্থায় তাকে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। যারা লেজার নিয়ে কাজ করে এবং হরমোন নিয়ে কাজ করে তারা এগুলো ব্যবস্থাপনা করে।
প্রথমে রোগী এলে আমরা একটি মূল্যায়ন করি। প্রথমত, হরমোনের কিছু পরীক্ষা রয়েছে, সেগুলো আমরা করি। যেমন—মেল হরমোন আমরা দেখি। টেসটোসটেরন হরমোনের অবস্থা কেমন, প্রোল্যাকটিনের অবস্থা দেখি। ফিমেল হরমোনগুলো কী অবস্থায় আছে, সেগুলো দেখা হয়। কারো কারো থাইরয়েড থেকে এই সমস্যা হয়। এটা আমরা দেখি। একটি আল্ট্রা সাউন্ড করে দেখি। আমরা দেখি পিসিওস আছে কি না। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রম রয়েছে কি না। এটাও খুব কম। এটিও জীবনযাপনের ধরনের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি সমস্যা। সমস্যা বললাম, রোগ বললাম না। কারণ, মানুষ ভাবে রোগ সারে না। তবে এই সমস্যাগুলো জীবনযাপনের ধরন বদলে ঠিক করা যায়। যেসব হরমোনের ঘাটতি আমার দেহের ভেতর হয়েছে, যেগুলো ঠিক করে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসা সম্ভব। যদি রোগী এ ব্যাপারে সচেতন থাকে। এর মাধ্যমে আমরা দেখি যে সে কোন গ্রেডে রয়েছে। যদি দেখি কেবল অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যা, তখন আমরা লেজার করি। আর যদি এর থেকে বেশি সমস্যা থাকে, আমরা ওষুধ দেই।
হরমোনের ভারসাম্য রক্ষার জন্য আমি কি সারা জীবন ওষুধ খাব, না কি ভারসাম্য ঠিক করে নিয়ে এসে ওষুধ খাব—আসলে পরেরটি হলো, সবচেয়ে আধুনিকতম সমাধান।