করোনাকালে ফুসফুসের যত্নে ৫ দাওয়াই
চিকিৎসকরা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানবদেহের ফুসফুস। ফলে দেখা দিচ্ছে শ্বাসকষ্টের সমস্যা। তাই এই মারণ ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়াই করতে ফুসফুস সুস্থ রাখতে বিশেষ নজর দিতে হবে।
স্বাস্থ্য ও জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। তাই অল্প বয়স থেকে ফুসফুসের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবল ফুসফুসই নয়, করোনাভাইরাস হৃৎপিণ্ড, কিডনি এবং স্নায়ুতন্ত্রসহ একাধিক অঙ্গের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
ফুসফুস সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে কেবল খাদ্যই যে বড় ভূমিকা পালন করে তা নয়। খাদ্যের পাশাপাশি আমাদের বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর নজর দেওয়া উচিত—
ধূমপান ত্যাগ
যাঁরা অত্যধিক ধূমপান করেন, তাঁদের করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি। কারণ, ধূমপানের ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফুসফুস। নিকোটিনের প্রভাবে ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায় ফুসফুসের বায়ুথলি। কমে যায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। ফলে দেখা দিতে পারে ক্যানসারসহ বিভিন্ন ধরনের অসুখ। তাই ফুসফুসের যত্ন নিতে অবিলম্বে ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম
ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন নিয়ম করে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে। এ ব্যায়ামগুলো ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে সহায়ক। ইন্ডিয়ান জার্নাল অব ফিজিওলজি অ্যান্ড ফার্মাকোলজিতে প্রকাশিত গবেষণাপত্র থেকে জানা যায়, যাঁরা প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে পাঁচ মিনিট গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করেন, অন্যদের তুলনায় তাঁদের ফুসফুসের কার্যক্ষমতা ভালো থাকে। তাই ফুসফুসের যত্ন নিতে ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে ডায়াফ্রাগমাটিক ব্রিদিং, পার্শড লিপস ব্রিদিং ইত্যাদির অভ্যাস গড়ে তুলুন।
শরীরচর্চা
ফুসফুসের যত্ন নিতে প্রতিদিন অন্তত ১৫ থেকে ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম করলে দেহে প্রচুর অক্সিজেন প্রবেশ করে, ফলে ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। তাই রোজ হাঁটা, স্কিপিং, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, প্রাণায়াম, ব্রিদিং এক্সারসাইজ, মেডিটেশন ইত্যাদি করুন। তবে এগুলো কেবল ফুসফুসকেই নয়, সামগ্রিকভাবে শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
সুষম খাবার
ফুসফুসের যত্ন নিতে প্রত্যেকেরই সঠিক ডায়েট মেনে চলা উচিত। খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার। তাই প্রতিদিন কমলালেবুর রস, আনারস, রসুন, গাজর, আপেল, কাঁচা হলুদ, আঙুর ইত্যাদি খান। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম ও বীজজাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম
উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চলার পাশাপাশি শরীরকে বিশ্রাম দেওয়ার দিকেও বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিদিন ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুম ফুসফুস ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে অত্যন্ত জরুরি।
তবে একটা কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে, কোনো কিছু করার আগে পেশাদার চিকিৎসক বা ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ গ্রহণ জরুরি।