করোনার বিরুদ্ধে লড়তে চার চাবিকাঠি
করোনাভাইরাস মানুষকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। ভ্যাকসিনের পথ চেয়ে সবাই। কবে আবিষ্কার হবে করোনার ভ্যাকসিন, কবেই বা পৃথিবী মুক্তি পাবে এই মারণ ভাইরাস থেকে—এ নিয়ে অন্তহীন চিন্তা মানুষের। বিজ্ঞানীরাও তাঁদের সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য ও জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাস রুখতে সচেতনতাই সবচেয়ে জরুরি। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষেত্রে চার মূল চাবিকাঠি অত্যন্ত প্রয়োজন বলে নিজস্ব মত প্রকাশ করছেন বহু চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ।
মাস্ক
নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। চিকিৎসকদের মতে, বাড়ির বাইরে পা রাখলে মাস্ক পরতেই হবে। তবে শুধু পরলেই হবে না, সঠিক নিয়ম মেনে তা পরতে হবে। পরার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে নাক ও মুখ ঢেকে থাকে। আর এই মাস্কটি যেন হয় থ্রি লেয়ারের। বাইরে পরার পাশাপাশি বাড়িতে যদি কোনো অসুস্থ মানুষ থেকে থাকেন, তবে তাঁর কাছে যাওয়ার আগেও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা আরো জানিয়েছেন, মাস্ক পরার পর তা সঠিক নিয়ম মেনে পরিষ্কার করতে হবে। কোনোভাবেই মাস্ক পরিষ্কার না করে পরা চলবে না।
সামাজিক দূরত্ব
মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স বা সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা আবশ্যক। এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তির মধ্যে কমপক্ষে ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। এক জায়গায় অনেকে মিলে জড়ো হবেন না। ভিড় জায়গা সর্বদা এড়িয়ে চলবেন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোনো বন্ধ করতে হবে।
হাত ধোওয়া বা স্যানিটাইজ করা
করোনাভাইরাস রুখতে মাস্ক পরার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা হাত ধোওয়ার ওপরও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সঠিকভাবে হাত ধুলে বা স্যানিটাইজ করলে সংক্রমণ অনেকটাই রুখে দেওয়া যাবে। তাই বারবার হাত ধোওয়ার ওপর জোর দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বাইরে থেকে ফিরলে, খাবারের আগে এমনকি কর্মক্ষেত্রে থাকাকালে ঘন ঘন হাত স্যানিটাইজ করার উপদেশ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। হাত না ধুয়ে কোনো অবস্থাতেই টি জোন অর্থাৎ চোখ, মুখ ও নাকে হাত না দেওয়ার দিকেও বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বিশেষজ্ঞদের মতে, যার ইমিউনিটি পাওয়ার যত বেশি, তার করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করা তত সহজ। তাই এ সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। এ ছাড়া মেনে চলতে হবে পারসোনাল হাইজিন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সুষম আহার অর্থাৎ ভিটামিন, মিনারেলস, প্রোটিন ও ফ্যাটযুক্ত খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি শরীরচর্চা, সময়মতো ঘুমাতে হবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই চার চাবিকাঠির মাধ্যমে ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে পারেন আপনিও। সঠিক নিয়ম অনুযায়ী এগুলো মেনে চললে আপনি সুস্থ থাকার পাশাপাশি সুস্থ থাকবে আপনার পরিবারও। খুব শিগগিরই পৃথিবী করোনামুক্ত হবে, এমন প্রত্যাশা সবার।