করোনা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে যা করবেন
প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। আবার এরই মাঝে মড়ার ওপর খাড়ার ঘা বসাচ্ছে ডেঙ্গু। করোনা আবহের মধ্যে বর্ষা আসার ফলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে পানি। কারণ পানি ছাড়া মশার বংশ বৃদ্ধি অসম্ভব। তাই ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে মশার বংশ বৃদ্ধি আটকানো সবচেয়ে জরুরি।
স্বাস্থ্য ও জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির মাঝে সাধারণ একটু জ্বর হলেই মানুষ করোনার ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে উঠছেন। আর যেহেতু ডেঙ্গুর উপসর্গের সঙ্গে কোভিড-১৯-এর উপসর্গও কিছুটা মেলে, তাই একটু শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলেই চিন্তার ভাঁজ পড়ছে কপালে।
চিকিৎসকদের মতে, সামান্য কিছু উপসর্গের পার্থক্যের মাধ্যমে করোনা ও ডেঙ্গুকে নির্ণয় করা সম্ভব। তাই আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। জেনে নিন এই দুই ভাইরাসের উপসর্গের মধ্যে পার্থক্যগুলো কী কী।
ডেঙ্গুর উপসর্গ
১. উচ্চ তাপমাত্রাযুক্ত জ্বর (১০১-১০২ ডিগ্রি)
২. গা, হাত, পা অসহ্য ব্যথা ও গাঁটে গাঁটে ব্যথা
৩. গায়ে র্যাশ
৪. অসহ্য মাথা ও চোখের আশপাশে ব্যথা
৫. বমি-বমি ভাব, আবার মাঝেমধ্যে বমি হয়ে যাওয়া।
৬. পেটে তীব্র যন্ত্রণা
৭. মুখের স্বাদ হারিয়ে ফেলা ও খিদে না পাওয়া
৮. দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া
৯. গলাব্যথা ও ঢোক গিলতে কষ্ট
কোভিড-১৯-এর উপসর্গ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সর্বাধিক সাধারণ লক্ষণ (যে লক্ষণগুলো সচরাচর দেখা যায়) : ১. জ্বর, ২. শুকনো কাশি, ৩. শারীরিক দুর্বলতা ও ৪. গলা ব্যথা। কম সাধারণ লক্ষণ (যে লক্ষণগুলো তুলনামূলক কম দেখা যায়) : ১. পা, হাত ও শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা, ২. পেট খারাপ ৩. মাথার যন্ত্রণা, ৪. স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলা, ৫. ত্বকে ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া, ৬. পায়ের আঙুলে লালচে ভাব জন্ম নেওয়া বা বিবর্ণতা। গুরুতর লক্ষণ : শ্বাসকষ্ট ও বুকে অসহ্য ব্যথা।
ডেঙ্গু ও করোনা প্রতিরোধে যা করবেন
১. জ্বর দেখে ডেঙ্গু বা করোনা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তাই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে র্যা পিড টেস্টের মাধ্যমে NS1 রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া প্লেটলেট কাউন্ট, পিসিআর টেস্ট, এলিজা টেস্ট করতে হবে। পাশাপাশি করোনার ক্ষেত্রে সোয়াব টেস্ট করতে হবে।
২. সুষম খাদ্য গ্রহণ এবং শারীরিক অনুশীলনের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
৩. প্রচুর পানি পান করতে হবে।
৪. করোনার ক্ষেত্রে পার্সোনাল হাইজিন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
৫. হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহারের পাশাপাশি মাস্ক পরতে হবে।
৬. ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে বাড়ির আশপাশে পানি জমতে দেওয়া যাবে না এবং চারিদিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ব্লিচিং পাউডার অথবা অ্যান্টি-লার্ভাল স্প্রে ব্যবহার করতে হবে।
৭. ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে মশারি টানিয়ে ঘুমানো এবং ফুল স্লিভ জামা-কাপড় পরতে হবে।
৮. কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরি।