চলছে মৌসুম, জেনে নিন আমের যত গুণ
সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফলের মধ্যে আম অনেকেরই পছন্দের শীর্ষে। আমকে ফলের রাজাও বলা হয়। বাহারি স্বাদ ও রঙের জন্যই নয়, স্বাস্থ্যগত উপকারের জন্যও ফলটি বেশ প্রিয়। আমে রয়েছে প্রোটিন, আঁশ, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন কে ও পটশিয়াম। দৈনন্দিন জীবনের নানা সমস্যা যেমন—অবসাদ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ প্রতিরোধে আম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া এটি লাবণ্য ধরে রাখতে, চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে ও শক্তি বাড়ায় এবং স্বাস্থ্যকর ওজন নিশ্চিত করে।
স্বাস্থ্য ও জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের প্রতিবেদনে আমের নানা গুণ ও স্বাস্থ্যগত উপকারিতার কথা বলা হয়েছে। চলুন, দেখে নেওয়া যাক আমের উপকারিতা :
কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ : আমে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি, পেকটিন ও আঁশ রয়েছে, যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাজা আম পটাশিয়ামে সমৃদ্ধ, এটি শরীরের কোষ ও পানির চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখে। হৃৎস্পন্দন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও আম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ : আম টারটারিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড ও সিটরিক অ্যাসিডে ভরপুর। এটি শরীরে অ্যালকালির পরিমাণ সমুন্নত রেখে অ্যাসিডিটি কমায়। অ্যাসিডের ক্ষতিকর প্রভাব কমাতেও সাহায্য করে আম।
হজমশক্তি বৃদ্ধি : আমে থাকা পেকটিন হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। আমে রয়েছে বেশ কয়েক প্রকার অ্যানজাইম, তা হজমপ্রক্রিয়া ভালো রাখতে সাহায্য করে।
চোখের জন্য উপকারী আম : আম ভিটামিন এ-তে ভরপুর। এক ফালি আম আপনার শরীরের দৈনিক ভিটামিন এ-এর চাহিদার ২৫ শতাংশ পূরণ করে। দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে আম, এ ছাড়া রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে আম।
ত্বক ভালো রাখে : আমে থাকা উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ভিটামিন সি-তে বিদ্যমান কোলাজেন আপনার ত্বকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
হৃদযন্ত্র ভালো রাখে : আম পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ভালো উৎস। এটি হৃৎস্পন্দন ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তচাপ ভালো রাখতে উপকারী।
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : আমে থাকে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং ২৫ প্রকারের কেরোটেনয়েডস, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকায় আম ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াই করে। আমে রয়েছে ফোলেট, ভিটামিন কে, ভিটামিন ই ও বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন বি, যা প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় : আমে রয়েছে উচ্চমাত্রায় পলিফেনলস, যেটি ক্যানসারের বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম। এটি অক্সিডেটিভ চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং ক্যানসারের কোষগুলো বেড়ে ওঠা প্রতিরোধ করে।
অ্যাজমা প্রতিরোধে সহায়ক : বেশ কিছু গবেষণা-নিবন্ধে বলা হয়েছে, আমে থাকা ভিটামিন এ ও বেটা ক্যারোটিন শিশুদের অ্যাজমা প্রতিরোধ সহায়ক। যদিও এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।
মৌসুমি ফল আমের রয়েছে ব্যাপক খ্যাতি। এটি যেমন সুস্বাদু, তেমনি এটি খেয়ে রোগবালাই থেকেও দূরে থাকা সম্ভব। অতএব আম খান, স্বাস্থ্য ভালো রাখুন।