পুরুষ কেন তার অক্ষমতা মানতে চায় না?
শুধু নারী নয়, ইদানীং অনেক পুরুষ বন্ধ্যত্ব সমস্যায় ভুগছে। কিন্তু লজ্জা বা সামাজিক কারণে অনেক পুরুষ ডাক্তারের শরণাপন্ন হয় না। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছ থেকে জানব, পুরুষের বন্ধ্যত্ব কী এবং বন্ধ্যত্ব সমস্যায় পুরুষের কাউন্সেলিং কতটা জরুরি।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে পুরুষের বন্ধ্যত্ব সমস্যা ও প্রতিকার নিয়ে কথা বলেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জান্নাত আরা ফেরদৌস। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ডা. সামিউল আউয়াল স্বাক্ষর।
সাধারণ সবাই মহিলাদের বন্ধ্যত্ব নিয়ে কথা বলে থাকে। আজ আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে কথা বলব। এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ধরা পড়ছে যেটি, সেটি হলো পুরুষ বন্ধ্যত্ব। সে ক্ষেত্রে পুরুষ বন্ধ্যত্ব বলতে কী বোঝায়, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. জান্নাত আরা ফেরদৌস বলেন, বন্ধ্যত্ব ব্যাপারটা শুধু পুরুষের না, পুরুষ-মহিলা দুজনেরটা মিলেই আমরা চিন্তা করি। কিন্তু আমাদের সমাজ প্রথমেই আঙুল তুলে তাকায় মেয়েটার দিকে। পাশাপাশি ছেলেরও কিছু কিছু প্রবলেম থাকতে পারে। পুরুষেরও দেখা যায় বেশি কিছু সমস্যা থাকে। বন্ধ্যত্ব বলতে যেটা, নরমালি আমরা যে ডেফিনেশনটা বলি, যদি কোনও কাপল একসাথে থাকে, এক বছর পর্যন্ত একসাথে থাকে, কিন্তু তার পরেও দেখা যায় যে তাদের বাচ্চা ধারণে অক্ষম, সেই কাপল বন্ধ্যত্বে ভুগছে, আমরা সেই কথা বলি। মেয়েটারও কারণেও হতে পারে, পুরুষের জন্যও হতে পারে। সুতরাং পুরুষের বন্ধ্যত্ব বলতে একই জিনিস বোঝায়।
আমাদের সমাজে সবাই এ বিষয়টি মেনে নিতে চান না কিংবা অনেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে আসেন না। সাধারণত সেই বিষয়টি কীভাবে কাউন্সেলিং করা হয়, সঞ্চালকের এ প্রশ্নের জবাবে ডা. জান্নাত আরা ফেরদৌস বলেন, এই কাউন্সেলিংটা খুব কঠিন। খুব কঠিন বলতে, সাধারণত পুরুষেরা যেটি করে, তার স্ত্রী আসে। স্ত্রী কখনও তার ননদের সাথে আসে, শাশুড়ির সাথে আসে, মায়ের সাথে আসে, বোনের সাথে আসে। খুব কম সংখ্যায় দেখা যায় স্বামী তার সাথে আসছে। প্রথমবার যেটা করি, তার ওয়াইফের সমস্ত হিস্ট্রি নিই। তার কনজুগাল লাইফ, তার সেক্সুয়াল কোনও প্রবলেম আছে কি না, সেটাও আমরা জিজ্ঞেস করি। সে ক্ষেত্রে একটু আইডিয়া করা যায় যে হাজব্যান্ডের কোনও প্রবলেম আছে কি না।
ডা. জান্নাত আরা ফেরদৌস বলেন, পুরুষের হিস্ট্রিটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি মনে হয় স্বামীর প্রবলেম থাকতে পারে, তখনই প্রেসক্রিপশনে খচখচ করে লিখে দিই যে স্বামীর কিছু পরীক্ষা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে তাকে দিয়ে আপনি সেই টেস্ট করাতে পারবেন না। সুতরাং প্রথমে আমরা যেটা করি, সবাই যেটা করে যে আগে স্ত্রীর বেসিক যে টেস্টগুলো থাকে, যেগুলো বন্ধ্যত্বের কারণ হতে পারে, সেগুলো করতে দিই। তখন হয়তো তাকে আমরা বলে দিই, যখন আপনি রিপোর্ট নিয়ে আসবেন, তখন অবশ্যই আপনার স্বামীকে নিয়ে আসবেন। যদি হিস্ট্রি দেখে মনে হয় এটা খুব জরুরি। তখন স্বামী এলে তাকে কাউন্সেলিং করি। বলি, বাচ্চাটা দুজনেরই। যখন স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থাকে, তখন কাউন্সেলিংটা এমন হয় যে সমস্যা আপনারও থাকতে পারে, ওয়াইফেরও থাকতে পারে। এখন কার সমস্যা, সেটা আমরা বুঝতে পারছি না। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে বোঝা যাবে যে সমস্যাটা কার। সে ক্ষেত্রে স্বামীকে একটাই টেস্টের কথা বলি, সেটা সিমেন এনালাইসিস বা বীর্যের পরীক্ষা।
পুরুষের বন্ধ্যত্ব সম্পর্কে আরও জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।