মেদ কমাতে চান? ৫ মিনিট দাঁড়ান এভাবে
শরীরের মেদ নিয়ন্ত্রণে কত কিছুই না করতে হয়। কিন্তু এ মেদ কমানোই যেন সবচেয়ে কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায়। সারা দিনের ব্যস্ততায় প্রতিদিন ব্যায়ামের জন্য সময় বের করাটাও কঠিন। এ ছাড়া অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম, পার্টি-পিকনিক, পেট ভরাতে মাঝেমধ্যে জাঙ্ক ফুড তো আছেই। আর এতে শরীরের ওজন বাড়ছে হু হু করে।
এমন সমস্যার সমাধান মিলতে পারে প্রতিদিনের মাত্র পাঁচ মিনিট সময়ে। পাঁচ মিনিটের একটি অভ্যাসই মেদ জমার পথে বাধা হয়ে উঠতে পারে, একে বলে ‘দ’ হয়ে দাঁড়ানো। ব্যায়ামের পরিভাষায় ‘স্কোয়াট’। চেয়ারে বসার মতো করে হাঁটু ভাঁজ করে কোমর ও পিঠ সোজা রেখে দাঁড়ানোকেই ‘স্কোয়াট’ বলে। এ সময় হাত দুটি সামনের দিকে টানটান করে ছড়িয়ে দিতে হয়। বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে এই ব্যায়াম সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন শরীরচর্চার সময় না পেলেও নিয়ম করে পাঁচ মিনিট স্কোয়াট শরীরের অনেক উপকার করে। স্কিপিং, দৌড়ানো ও হাঁটাহাঁটিতে পায়ের পেশির যে উপকার মেলে, স্কোয়াট তার অনেকটাই পুষিয়ে দেয়। কোমর ও পায়ের পেশিকে শক্তসমর্থ করে ‘স্কোয়াট’।
ভারতীয় ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সুকোমল সেন বলেন, ‘শুধু পেশির জোর বাড়ানোই এর একমাত্র কাজ নয়, টেস্টোস্টেরন ও গ্রোথ হরমোন ক্ষরণে বিশেষ কার্যকর এই ব্যায়াম। যার ফলে পেশির বৃদ্ধি ও ভরকে নিয়ন্ত্রণ করা অনেক সহজ হয়। সারা শরীরে শক্তির সমান বণ্টনের ক্ষেত্রেও বিশেষ কাজ করে এ ব্যায়াম।’
দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যায়াম অভ্যাসের ফলে কথায় কথায় পেশিতে টান, গাঁটে ব্যথা, একটু দৌড়ঝাঁপেই পেশির ব্যথার মতো সমস্যা দূর হয়। প্রতিদিন এমন ব্যায়ামে শরীর সারা দিন সতেজ তো থাকেই, সঙ্গে শরীরের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। দেহের ভারসাম্য ও গতিশীলতা সব কিছুকেই স্বাভাবিক করতে সক্ষম এই ব্যায়াম।
হাঁটাহাঁটিতে যে পরিমাণ ক্যালোরি বার্ন হয়, তার চেয়েও বেশি ফ্যাট ঝরাতে পারে এই ব্যায়াম। স্কোয়াটের ফলে শরীরে আঘাতের প্রবণতা কমে ও পেশীর নমনীয়তা বাড়ায়। ফলে শরীর সহজে ভারসাম্য হারায় না। শরীরের গঠন, পিঠ ও কোমরের আকার ও পুরো শরীরে নানা অ্যাব তৈরি করতে স্কোয়াট একাই একশো।
শুধু তা-ই নয়, শরীরে ফ্যাট নিয়ন্ত্রণ, লিপিড মেটাবলিজম, রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখা ইত্যাদিও এই ব্যায়ামের মাধ্যমে সম্ভব। ক্ষতিকর ফ্যাট গলিয়ে ডায়াবেটিস, ওবেসিটি ইত্যাদি থেকে শরীরকে অনেকটাই দূরে রাখার ক্ষমতা রাখে ‘স্কোয়াট’।
এই ব্যায়ামের প্রভাবে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। হরমোন ক্ষরণ, কোষে কোষে পুষ্টিগুণ পৌঁছানোর কাজও সহজ হয়ে যায়। ফলে পেটের সমস্যা প্রতিরোধ, সারা শরীরে উপকারি বডি ফ্লুয়িড পৌঁছানোর মতো প্রয়োজনীয় জৈবিক কাজও অনেক সহজ করে তোলে এই স্কোয়াটের অভ্যাস।