যেভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন উচ্চ রক্তচাপ
আজকাল অনেক বাড়িতেই বেশি বা কম বয়সী, উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের প্রবণতা দেখা যায়। আগে মনে করা হতো, প্রাপ্তবয়ষ্কদের শুধু উচ্চ রক্তচাপ হয়, কিন্তু এ ধারণা ভুল। কম বয়সীদেরও উচ্চ রক্তচাপ হয়। সাধারণত অধিক ওজন, অতিরিক্ত ফাস্টফুড এবং বিশৃঙ্খল জীবনযাপনের কারণে প্রেশারের সমস্যায় ভুগতে পারেন।
উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের খাবার কেমন হবে, এনটিভির নিয়মিত এক স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানে এ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী। তিনি বলেন, উচ্চ রক্তচাপ হলে প্রথম যেটা করণীয়, সেটা হলো চিকিৎসকের কাছে গিয়ে এর জন্য ওষুধ গ্রহণ করা এবং সেইসঙ্গে খাবারের নিয়ন্ত্রণ অনেক জরুরি। কেননা, উচ্চ রক্তচাপ মানেই হচ্ছে এটা থেকে পরবর্তীতে কিডনি এবং হৃদরোগের মতো মারাত্মক রোগ হতে পারে। তাই প্রত্যেক উচ্চ রক্তচাপ রোগীর উচিত তার রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা।
পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরীর পরামর্শ, প্রথমত খাবারের লবণের দিকটা বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে টেবিল সল্ট বা এক্সট্রা লবণ, যেটাকে আমরা একেবারেই এড়িয়ে চলতে বলি; সেইসঙ্গে বিটলবণ এবং অন্যান্য মুখরোচক টেস্টমেকার বা সল্ট রয়েছে, সেগুলো অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে। রান্নার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন সয়াসস বা কমার্শিয়াল সসের ব্যবহার না হয়। কেননা, প্রেশার মানেই অনেকে মনে করে লবণ, গরুর মাংস আর শুধু ডিমের কুসুম। বিষয়টি তা নয়। লবণের পাশাপাশি এ রকম অনেক খাদ্য উপাদান আছে, যেগুলো সতর্কতার সঙ্গে প্রেশারের রোগীদের গ্রহণ করা উচিত। উচ্চ রক্তচাপে যারা থাকে, তারা অনেক সময় প্রেশার হাই হয়ে গেলে আচারের আশ্রয় নেয়। মনে করে, টক খেলে প্রেশার কমবে, যেটা ভুল ধারণা। আচারে অনেক তেল থাকে এবং অনেক লবণের ব্যবহার করা হয়। সুতরাং প্রেশার কমাতে কখনোই আচারকে বেছে নেবেন না। সেইসঙ্গে ফাস্টফুড বা অন্যান্য ফ্যাটি ফুড যেমন—ডিমের কুসুম, গরুর মাংস, খাসির মাংস, বিশেষ করে ভাজাপোড়া খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে।
তিনি বলেন, সারা দিনের খাবারে পটাশিয়ামযুক্ত খাবারের মাত্রাকে যদি বাড়িয়ে দেন, সে ক্ষেত্রে প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন। সাধারণত ডাবের পানি, কলা, সবজি, সালাদ বেশি করে খেলে আপনার উচ্চ রক্তচাপ খুব সুন্দরভাবে মেইনটেইন হবে। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, ওজন কাম্য ওজনে রাখতে হবে। অর্থাৎ আইডিয়াল ওজন মেইনটেইন করতে পারলে উচ্চ রক্তচাপের প্রবলেম এবং এ-সংক্রান্ত অন্যান্য রোগ থেকে নিজেকে সহসাই বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব। নিয়মিত হাঁটার পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসকে পরিবর্তন করলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি থেকে আপনি ও আপনার পরবর্তী প্রজন্মকে নিরাপদে রাখতে পারবেন।