শীতে ৪ রোগের প্রকোপ, সমাধানের উপায়

ঋতু চক্রের পালাবদলে শীত জেঁকে বসেছে। শীত মানেই যেন টাটকা সবজি, পিঠাপুলি, খেজুরের রস আর নবান্নের ধুম। অন্যদিকে শীতের সঙ্গে সঙ্গে এসে পড়ে কিছু অসুখ-বিসুখের নামও। এ রকম কিছু অসুখ-বিসুখের কথাই আলোচনা করা যাক।
- ঠাণ্ডা লেগে সর্দিজ্বর
এটা মূলত ভাইরাসজনিত অসুখ। প্রায় শ’খানেক ভাইরাস রয়েছে যারা শীতে সর্দি জ্বরের প্রকোপ বাড়ায়। ঋতু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যখন গরমের পর শীত আসে, তখন আমাদের শরীর এ পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও তখন কিছুটা দুর্বল হয়ে যায়। এ সুযোগ কাজে লাগায় ভাইরাস। এতে দেখা দেয় সর্দিজ্বর, নাক বন্ধ, গলা খুসখুস, হাঁচি-কাশি, গলা ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
এ সময়ে খুব সচেতন থাকা দরকার। ঠাণ্ডা যাতে না লাগে এ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে বেশি সাবধান থাকতে হবে। সর্দিজ্বর হলে প্রচুর পানি পান করুন। ফলের রস, লেবুর রস খুব উপকারী। চিকেন স্যুপ ও ভিটামিন-সি জাতীয় খাবার ভালো পথ্য হিসেবে কাজ করে।
- নিউমোনিয়া
শিশু আর বয়স্ক—যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা বেশি আক্রান্ত হয়। ফ্লুর জটিলতা হিসেবেও নিউমোনিয়া হতে পারে। মূলত বিশেষ কিছু ব্যাকটেরিয়া আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভাইরাস এর জন্য দায়ী। জ্বরের মাত্রা থাকে খুব বেশি। কাশি হয়, শ্বাসকষ্টও হয়। নিউমোনিয়া থেকে মৃত্যুও হতে পারে। সময়মতো ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। প্রয়োজনে উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হতে পারে।
- অ্যাজমা
শীতের শুরুতেই অ্যাজমা বা হাঁপানির প্রকোপ বাড়ে। ঋতু পরিবর্তনের ধাক্কা শরীরের রোগ প্রতিরোধ পদ্ধতিকে উলটপালট করে দেয়। প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দেয় অ্যাজমা। যাঁরা অ্যাজমার রোগী, শীতের শুরুতেই তাঁরা সাবধান হয়ে যাবেন। ধুলোবালি, ঠাণ্ডা পানি এড়িয়ে চলবেন। ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। প্রয়োজনে ওষুধপত্র বা ইনহেলার ব্যবহার করতে হতে পারে।
- হৃদরোগ
শীতে শরীরে রক্ত চলাচল কমে যায়। ধমনির শিরাগুলো অপেক্ষাকৃত সরু হয়ে যায়। হৃৎপিণ্ডেরও একই অবস্থা। এতে হৃৎপিণ্ডের ধমনিতে রক্ত চলাচল কমে গিয়ে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এ কারণেই দেখা যায় শীতে হার্ট অ্যাটাকের মাত্রা বেড়ে যায়।
শীত এলে তাই হার্টের রোগীরা বাড়তি সচেতন থাকবেন। সকাল-বিকেল একটু দৌড়-ঝাঁপ করলে শরীর গরম থাকবে। গোসলের সময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করবেন।
লেখক : চিকিৎসক, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল