হার্ট অ্যাটাক কেন হয়?
হার্ট অ্যাটাক একটি জটিল সমস্যা। বিভিন্ন কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন ‘স্বাস্থ্য প্রতিদিন’ অনুষ্ঠানে ২৬৫৯তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. এম এ বাকী। বর্তমানে তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রশ্ন : একজন মানুষ হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয় কেন?
উত্তর : হার্ট অ্যাটাক বিষয়টা হলো—হার্টের গায়ে যে রক্তনালিগুলো থাকে, যেখান থেকে হার্ট তার রক্ত সরবরাহ পায়; সেখানে রক্তনালিগুলো ব্লক হয়ে যাওয়া। এই রক্তনালিগুলো ব্লক হওয়ার পেছনে কিছু কিছু কারণকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি কারণকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়। অন্যতম হলো ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল ও বংশগত কিছু কিছু কারণ।
যারা ধূমপান করে, তারা একটু ঝুঁকির মধ্যে থাকে। ডায়াবেটিস থেকে করনারি আর্টারি ডিজিজ বা ব্লক খুব বেশি পরিমাণে হয়। উচ্চ রক্তচাপ যদি অনিয়ন্ত্রিত থাকে সেখান থেকে রক্তনালি ব্লক হতে পারে। আমাদের শারীরিক পরিশ্রম কম থাকার জন্য, পরিশ্রম কম থাকার জন্য, চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার জন্য, তৈলাক্ত খাবার খাওয়ার জন্য উচ্চ কোলেস্টেরল বাড়ার জন্য রক্তনালি ব্লক হতে পারে।
এটি কিন্তু আমাদের জানতে হবে যে আমি কতটুকু ঝুঁকির মধ্যে আছি। সাধারণ লোকেদেরও জানতে হবে হার্ট অ্যাটাক কী কী কারণে হতে পারে।
চারটি বিষয় আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ। ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল। এগুলোকে ঝুঁকির কারণ বলা হয়। যখনই একটি ঝুঁকির কারণ আপনার শরীরে চলে আসে, তখন সতর্ক হতে হবে। হয়তো আপনার উচ্চ রক্তচাপ আছে, প্রেশারকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। চিকিৎসকের যেমন কর্তব্য রোগীকে বোঝানো, তেমনি রোগীরও কর্তব্য সেটা মেনে চলা। অনেক রোগী কিন্তু আমাদের কাছে বলে, ‘আমরা ওষুধ ধরতে চাই না। একবার ধরলে আর ছাড়া যাবে না’। এটা করা যাবে না। এটি যে ভুল চিন্তা সেটি রোগীকে বোঝাতে হবে।
যখন রক্তনালিতে রক্তচাপ বেড়ে যাচ্ছে, এই চাপকে আমি যদি নিয়ন্ত্রণ না করি, তাহলে তিন বছর বা পাঁচ বছর পর আমার হার্টের রক্তনালি বন্ধ হবে। এতে হার্ট অ্যাটাক হবে। তখন বিষয়টিকে আমি ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারব না। আমার কিডনি ফেইলিউর হয়ে যাবে, অথবা আমার স্ট্রোক হবে। তাই আমাদের দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোকে নিরাপদ রাখার জন্য আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা এবং পরিমিত খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে রক্তের কোলেস্টেরলকে কমিয়ে রাখা—এই জিনিসগুলোর বিষয়ে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি ধূমপানকে এড়িয়ে যেতে হবে।