ডাল খেলে পেট খারাপ হয়?
কথায় বলে, ডাল হচ্ছে গরিবের মাংস। এ কথা বলার কারণ হলো ডালে ও মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ প্রায় কাছাকাছি। আরো সঠিক করে বলতে গেলে বলতে হয়, ডালে প্রোটিনের পরিমাণ একটু বেশি। তবে এই প্রোটিন হচ্ছে ভেজিটেবল প্রোটিন আর মাংসেরটা অ্যানিমেল প্রোটিন। মাংস ও ডালের খাদ্যশক্তির তুলনায় ডাল অনেকটাই এগিয়ে।
ডালের খাদ্যশক্তি মাংসের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা তিন গুণ বেশি। আর মাছের প্রোটিন ও খাদ্যশক্তির অবস্থাও অনেকটা মাংসের মতো। বিভিন্ন মাছের ক্ষেত্রে প্রোটিন ও খাদ্যশক্তির বিভিন্নতা আছে। এ ছাড়া ডালে আরো কিছু উপাদান রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে ভিটামিন ও মিনারেল উল্লেখযোগ্য।
মাংসে ভিটামিন ও মিনারেলের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তবে মাছে ভিটামিন না থাকলেও একটু-আধটু মিনারেল আছে। যে ডালের এত সুনাম, সেই ডাল সম্পর্কে অনেকের মনে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। ডাল খেলে পেট খারাপ হয়—এমন একটি ধারণা অনেকের মনেই বদ্ধমূল। মাছ-মাংসের পরিবর্তে ডাল হচ্ছে একমাত্র খাবার। এটি শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি মেটায় এবং অধিক শক্তি জোগায়। ডাল খেলে পেট খারাপ করে—এমন ধারণার কোনোই যুক্তি নেই। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। তা ছাড়া ডাল যেভাবে রান্না করা হয়, তাতে পেটে মসলা কিংবা ঝালের আক্রমণে উত্তেজনার উদ্রেক হওয়ার কথা নয়। বরং ডাল হচ্ছে খুবই সহজপাচ্য, ঠান্ডা ধরনের খাবার। ডালের উৎকৃষ্টতা প্রমাণে কয়েকটি তথ্য তুলে ধরা যেতে পারে। যেমন—খাসির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ ২১.৪ গ্রাম (প্রতি ১০০ গ্রামে) এবং খাদ্যশক্তি ১১৮ কিলোক্যালরি। প্রতি ১০০ গ্রাম রুই মাছে প্রোটিনের পরিমাণ ১৬.৬ গ্রাম এবং খাদ্যশক্তি ৯৭ কিলোক্যালরি। অন্যদিকে ১০০ গ্রাম মসুরের ডালে প্রোটিনের পরিমাণ ২৫.১ গ্রাম এবং খাদ্যশক্তি ৩৪৩ কিলোক্যালরি। কাজেই ডাল নিয়ে ভ্রান্ত ধারণার অবকাশ নেই। শরীর গঠনে ডাল একটি অপরিহার্য খাদ্য। ডাল খাওয়ার সঙ্গে পেটের অসুখের কোনো সম্পর্ক নেই। পেটের অসুখের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে দূষিত পানি, নষ্ট খাবার এবং অপরিচ্ছন্ন জীবনযাত্রার।