বিড়ি কারখানার শ্রমিকরাও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে
তামাক যারা গ্রহণ করে কেবল তারা নয়, যারা এসব উৎপাদন কারখানায় কাজ করে তারাও তামাকের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৭৫৫তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান মোল্লা ও অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন।
অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান মোল্লা বর্তমানে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ওরাল ও ম্যাক্সিলোফেশিয়াল বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত এবং অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন বর্তমানে স্কয়ার হাসপাতালের অনকোলজি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : যেসব শ্রমিক বিড়ি-সিগারেটের কারখানায় কাজ করে, তারাও কি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে?
অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন : আমাদের দেশে যাদের স্বল্প আয়, তারা বেশির ভাগই বিড়ি খায়। এটি একেবারে কাঁচা তামাক। এটা মারাত্মক ক্ষতিকর।
অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান মোল্লা : অনেকের মধ্যে হতাশা আছে। আয় ভালো নেই। বিষণ্ণতাতেও কিন্তু বিড়ি-সিগারেট খেয়ে কেমন যেন নেশাগ্রস্ত হয়ে থাকে, কিছু সময়ের জন্য তার খারাপ লাগাকে ভুলতে চেষ্টা করে। এই জন্য সম্পূর্ণ দেশের অর্থনীতি যদি ভালো না হয়, প্রতিটি জায়গায় এই সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে।
এনটিভি : বিড়ি-সিগারেটের কারখানায় যেসব শ্রমিক কাজ করে, তারাও কি সমানভাবে ভুক্তভোগী হতে পারে?
উত্তর : অবশ্যই তারাও ভুক্তভোগী হয়। আবার, উচ্চ ট্রাফিক এলাকায় (যেমন ঢাকা শহর) শুধু তামাকের কারণেই যে মানুষের ফুসফুসে ক্যানসার হচ্ছে সেটি নয়। পরিবেশগত দূষণের কারণে এলাকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর যারা কারখানায় কাজ করে, তাদের বেশির ভাগই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমার অনেক রোগী আছে, শ্রমিক শ্রেণির যারা নিয়মিতভাবে বিড়ি খেত। এখন ফুসফুসের ক্যানসার নিয়ে এসেছে।
অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান মোল্লা : পুরান ঢাকায় ছোট ছোট কারখানা আছে, মাস্ক ছাড়া পেইনটিং করছে। বিভিন্ন রাসায়নিক নিয়ে কাজ করছে। জটিল দূষণের শিকার হচ্ছে। বাচ্চা তো বোঝেই না, মালিকপক্ষও তাদের মাস্ক পরতে বলে না।
এনটিভি : ফুসফুসের ক্যানসারের লক্ষণ কখন প্রকাশ পাবে? কখন তাদের চিকিৎসকের কাছে আসা উচিত?
অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন : আমেরিকান ক্যানসার সোসাইটির একটি গাইডলাইন আছে, আমরা বলি যে প্রতিদিন যদি কেউ দুই প্যাকেট সিগারেট খান, ১৫ বছর পর্যন্ত, তার বয়স যদি ৫৫ বছরের বেশি হয়, তাঁকে আমরা পরপর তিন বছর লো ডোজ সিটিস্ক্যান করতে বলি। এক্স-রে থেকে লো ডোজ সিটিস্ক্যান করে বেশি রোগীকে চিহ্নিত করা যায়। দ্রুত ধরা পড়লে সুবিধা হলো রোগীকে সুস্থ করার সুযোগ পাওয়া যায়।
অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান মোল্লা : তবে গ্রামের অবস্থা চিন্তা করেন যেখানে একটি ভালো এক্স-রে মেশিন নেই, সেখানে চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা নিয়ে, লক্ষণ দিয়েই মোটামুটিভাবে ঠিক করতে হয়। তখন তাকে শহরে পাঠাতে হবে।
অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোহাম্মদ আকরাম হোসেন : তবে একটি মুশকিল হলো লক্ষণ যখন রোগটির আসে, তখন রোগটি অনেক এগিয়ে যায়। এই জন্যই প্রতিরোধ জরুরি।