সুখী হতে পারেন ৩০ দিনেই
সুখী মানুষের গল্পটা কী মনে আছে? একজন রাজা খুব অসুখে পড়লেন;কোন চিকিৎসক, কবিরাজই তার রোগ সারাতে পারলেন না। এরপর একজন বড় কবিরাজ এসে জানালেন, রাজাকে সুখী মানুষের জামা পরাতে হবে। তবেই সে সুস্থ হবে। পাইক পেয়াদারা রাজ্যজুড়ে সুখী মানুষ খুঁজতে লাগল। সুখী মানুষ তো আর পাওয়া যায় না! শেষে এক নদীর ধারে পাওয়া গেল দুঃখ নেই এমন একজন মানুষকে। পেয়াদারা রাজার জন্য খুশি হয়ে তার কাপড় চাইল। দেখা গেল, সুখী মানুষটির কোনো কাপড়ই নেই।
গল্পটির সারমর্ম এমন ছিল, সবচেয়ে সহজ সরল ইতিবাচক মানুষটিই হয় তো দুনিয়াতে সবচেয়ে সুখী। তবে আদতেই কী সুখী হওয়া এতটা সোজা!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, মুড হচ্ছে গতি। তাই যদি কেবল নেতিবাচক চিন্তার মধ্যে থাকেন, নেতিবাদী চিন্তার গতি কেবল বাড়তেই থাকবে। এটা থেকে বেড়িয়ে আসা সহজ হবে না। হা হুতাশ তৈরি হবে।
বিশেষেজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে সুখী হওয়ার কিছু উপায় জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট মাইন্ডবডি গ্রিন।
সুখী থাকার অভিনয়
আপনার ভেতরে হয়তো অনেক কষ্ট হচ্ছে,এরপরও সুখী থাকার অভিনয় করুন। দুঃখ বোধের অভ্যাসকে বদলান।যদিও তা খু্বই কঠিন। দুঃখের মধ্যে থেকে সুখী থাকার নাটক করা হয়তো উদ্ভট কাজ মনে হতে পারে। তবে সময়ের সাথে সাথে এই ইতিবাচক পদক্ষেপ আপনার ভেতরে পরিবর্তন শুরু করতে সাহায্য করবে।
ইতিবাচক চিন্তা
যদি অস্বাস্থ্যকর খাবার স্বাস্থ্য সমস্যায় ফেলে তাহলে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াই উত্তম। তেমনি নেতিবাচক চিন্তা যদি মাথায় সবসময় ভিড় করে একে সরান ইতিবাচক চিন্তার মাধ্যমে।চেষ্টা করুন ইতিবাচক চিন্তা ধারাবাহিকভাবে করতে। এই ইতিবাচক চিন্তার প্রবাহ আপনার মনকে ধীরে ধীরে প্রভাবিত করবে।
মুখে ইতিবাচক ভাব রাখুন
যদি আপনার মন খারাপও থাকে তবুও পরিবারের লোকজন বা সহকর্মীদের সঙ্গে হাসি মুখে কথা বলার চেষ্টা করুন।
নিজের সাথে কথা বলুন
অন্যের সাথে বেশি কথা বলার চেয়ে নিজের সাথে কথা বলুন। নিজের সাথে কথা বলা মনকে প্রভাবিত করবে। কিছু ইতিবাচক কথা বলুন। যেমন : আমি সুখী এবং স্বাস্থ্যবান হবো বা আমি ফিট থাকব। বাক্য ব্যবহারে বর্তমান কাল এড়িয়ে গিয়ে ভবিষৎ কালের বাক্য ব্যবহার করুন। যেমন : হবো, করব, হবে ইত্যাদি। এটা আপনার অবচেতন মনকে প্রভাবিত করে নেতিবাচক বিষয় থেকে বের করে নিয়ে আসবে। সারাদিন যদি এগুলোর পুনরাবৃত্তি করেন তবে নেতিবাচক বিষয়গুলো মনে ঢুকতে পারবে না।
বাণী
যেসব মহৎ বুদ্ধিজীবী বা ব্যক্তির কথা আপনাকে উজ্জীবিত করে সেসব ব্যক্তির কথা বা বাণী প্রতিদিন সকালে উঠে পড়ুন এবং সেই বাণী প্রতিফলন নিজের জীবনে ঘটান। এটা আপনার আত্মিক উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করবে।
নেতিবাচক মানুষ থেকে দূরে থাকুন
বন্ধু অথবা পরিবারের লোকজন যারাই আপনাকে নেতিবাচক বিষয়গুলো মনে করিয়ে দেবে বা কষ্ট দেবে তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। শেষ পর্যন্ত আপনিই পারেন নিজের আবেগগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে।তাই অন্যের দোষারোপকে নিজের গায়ে মাখবেন না। আবার আরেকভাবে ভাবতে পারেন, অন্যরা চাইছে আপনাকে আহত করতে, তাহলে কেন তাদের কথায় আহত হয়ে নিজেকে কষ্ট দিয়ে তাদের জিতিয়ে দেবেন?
এই নেতিবাচক সম্পর্কগুলো আপনাকে সুখী করার পথে বাধা। তাই যারা এধরনের কথা বলে তাদের কাছ থেকে একেবারে দূরে না থাকা গেলেও কিছুটা হলেও দূরত্ব বজায় রাখুন।
শুরুতে উপরের বিষয়গুলো মানতে আপনার বেশ অস্বাভাবিক লাগতে পারে। তবে যদি বিষয়গুলো পালনের বিষয়ে দৃঢ় থাকেন তাহলে ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যেই একটি ইতিবাচক পরিবর্তন দেখতে পাবেন নিজের ভেতরে।সুতরাং নেতিবাচক চিন্তাকে সমূলে উৎপাটন করা জরুরি। ইতিবাচক চিন্তা ধীরে ধীরে আপনাকে পরিবর্তন করে সুখী ও সুন্দর ব্যক্তিত্বের অধিকারী করতে সাহায্য করবে।