ওজন কমায় লাউ
লাউ আমাদের পরিচিত একটি সবজি। এর শতকরা ৯৬ ভাগই পানি। তাই এটি সহজে হজমযোগ্য ও গরমের দাবদাহে দেহের পানির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। লাউ আমাদের দেহের ক্লান্তি ভাব দূর করে দেহকে সতেজ করে। উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদযন্ত্রের অসুখের ওপর এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ছাড়াও ওজন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার জন্য জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। লাউ লম্বা, বোতলাকৃতির ও হালকা সবুজ বর্ণের হয়। ধারণা করা হয়, সর্বপ্রথম আফ্রিকা মহাদেশে এর উৎপাদন শুরু হয়।
লাউ যেমন আমাদের দেহে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে, তেমনি লাউয়ের পাতাও আমাদের দেহের জন্য উপকারী। লাউয়ের পাতার রস জন্ডিস রোগ সারাতে সাহায্য করে।
ক্ষারীয় প্রকৃতির লাউয়ের রসের ডাই-ইউরেটিক ক্রিয়ার জন্য যেকোনো ধরনের ইউরিনারি ইনফেক্শনে এটি উপকারী। লেবুর রসের সঙ্গে লাউয়ের রস যোগ করে গ্রহণ করা হলে মূত্রনালির জ্বালাপোড়া ভাব দূর হয়।
যকৃতের যথাযথ কার্যকারিতা রক্ষায় লাউয়ের বিশেষ ভূমিকা আছে।
লাউ আঁশসমৃদ্ধ হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে। এর আঁশে থাকে নিম্ন মাত্রার ফ্যাট, এ জন্য এটি ডায়াবেটিক রোগী ও ছোট শিশুদের জন্য উপকারী।
লাউয়ের ক্ষারীয় প্রকৃতির রস দেহে এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকর।
এক কাপ লাউয়ের জুস হতে ২৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন-সি ও ১ দশমিক ৮ মিলিগ্রাম জিংক পাওয়া যায়। দেহে হরমোনের ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে ও কোষের সুস্থ কার্যকারিতা রক্ষায় জিংক বিশেষভাবে উপকারী। অন্যদিকে, ভিটামিন-সি কোষের সুস্থতা রক্ষা করা ছাড়াও ডিএনএর জারন প্রতিরোধ ও কোলাজেন সৃষ্টিতে সহায়তা করে। এ দুটি বিশেষ উপাদান ছাড়াও লাউয়ে থায়ামিন, ভিটামিন-সি, জিংক, লৌহ, সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়।
এক চিমটি লবণ মিশিয়ে লাউয়ের জুস নিয়মিত গ্রহণে দেহের ইলেকট্রোলাইট সমতা বজায় থাকে। এ কারণে ডায়রিয়ার রোগীর জন্য লাউয়ের জুস খুবই উপকারী।
লাউ সৌন্দর্য রক্ষায়ও সহায়ক। বিশেষ উপায়ে এটি আমাদের সৌন্দর্য রক্ষায়ও ভূমিকা রাখে।
১০০ গ্রাম লাউ থেকে ৯৬ শতাংশ পানি ও ১২ ক্যালরি পাওয়া যায়। ফলে দেহের ওজন কমাতে লাউকে অন্যতম উপকারী খাদ্য হিসেবে গণ্য করা হয়।
লাউ অকালে চুল পাকা প্রতিরোধ করে। লাউ পাতার জুস চুল পড়া ও দাঁতের ক্ষয় রোধে কার্যকর।
নিয়মিত লাউয়ের জুস পান করলে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি পায় এবং ব্রণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সৈয়দা তাবাসসুম আজিজ : সহকারী অধ্যাপক, খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ।