ঈদে সাজসজ্জার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি
ঈদ মানে খুশি, আনন্দ। প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা হওয়া। একটু ভুল, অসতর্কতা অথবা কোনো অসুস্থতার জন্য ঈদটি হয়ে যেতে পারে মাটি। আর এই বিষয়টি সাজসজ্জার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
ঈদের সাজসজ্জার বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৪০তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. তাওহীদা রহমান ইরিন। বর্তমানে তিনি শিওর সেল মেডিকেলে ডার্মাটোলজি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ঈদের সাজগোজে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখতে হবে?
উত্তর : এখনকার তাপমাত্রা অনেক অনুকূল। সাজের জন্য এটি একটি সঠিক সময়। সাজসজ্জার প্রথমেই আসে একটি ক্লিনআপ রুটিন বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার রুটিন। ক্লিনআপ রুটিন কেবল মুখ নয়, পুরো শরীরের জন্য। এ ক্ষেত্রে ভালো ক্লিনজিং দিয়ে মুখ পরিষ্কার করব।
মেকআপ ব্লেন্ড করার জন্য বা ব্লাশনের জন্য যে ব্রাশ বা তুলিগুলো ব্যবহার করছি, সেগুলো আমি মুখের জন্য যে ক্লিনজার ব্যবহার করি সেগুলো দিয়ে পরিষ্কার করব। আর চুলের যে চিরুনি ব্যবহার করি সেগুলো পরিষ্কার করব মাথায় যে শ্যাম্পু ব্যবহার করি সেটি দিয়ে। আমরা কিন্তু এগুলোর বিষয়ে উদাসীন থাকি।
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলি, দেখা গেছে ঈদ চলে গেলে, ঈদের পরে রোগীরা এসেছে নানা রকম র্যাশ নিয়ে।
প্রশ্ন : এই সময়ে ঈদে গর্জিয়াস (জমকালো) সাজ কি উচিত হবে?
উত্তর : সাজপোশাক মেকআপ সবকিছু নির্ভর করবে আমার আবহাওয়ার ওপরে। আমি কোন পরিবেশে আমার ঈদকে পালন করছি তার ওপরে। আমি কি বাইরে যাচ্ছি, ঘরে থাকছি- এসবের ওপর ভিত্তি করে পোশাক নির্বাচন করব। আর শরৎ মানেই নীল আকাশে সাদা মেঘ, আর কাশফুল। সাদার শুভ্রতাকে আমি নির্বাচন করতে পারি। এ ছাড়া উৎসবে যেহেতু একটু রঙিন পোশাক পরা যায়, তাই এ ধরনের পোশাক পরতে পারি।
প্রশ্ন : অনেক গৃহিণীরা সারা দিন কাজকর্মের মধ্যে একটু পরিপাটি থাকতে চান, তাদের আসলে কী করণীয়?
উত্তর : কোরবানির আনন্দ তো আসলে দুটো। সাজসজ্জা আর কোরবানির প্রস্তুতি। আর ছেলেরা মাংস নিয়ে আসার পর একে ঠিক করার বিষয়টি কিন্তু সাধারণত মেয়েদের ওপর দিয়েই যায়। তারপরও তো একটি উপস্থাপনের বিষয় রয়েছে।
ত্বক যদি স্বাভাবিক বা শুষ্ক হয়, দু-তিনবার পরিষ্কার করতে পারি। আর যদি ত্বক তৈলাক্ত হয়, আমি চারবার পরিষ্কার করব। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে এখানে এক্সফোলিয়েশন ও মাস্ক খুব জরুরি। কারণ যেহেতু তিন-চারদিন ধরে অনুষ্ঠান থাকবে, আমাদের ত্বক কিন্তু একটু ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই ত্বককে ঠিক করার জন্য এক্সফোলিয়েশন করতে হবে। পরিষ্কারের পর একটি সানস্ক্রিন ব্যবহার করব। এটি টিনটেড হতে পারে বা নন বিসি হতে পারে। এটি আমার বেজ হিসেবে কাজ করবে। সঙ্গে যদি ইলুমিনেটিং উপাদান থাকে, তাহলে বাড়তি মেকআপের দরকার নেই। আর যাদের ত্বর একটু তৈলাক্ত ইলুমিনেটর পাউডার ব্যবহার করতে পারে।
কসমেটিক, জুয়েলারি ত্বকে র্যাশ করতে পারে। আর্টিফিসিয়াল জুয়েলারি বা মেকআপ জুয়েলারিগুলো অ্যালার্জিক র্যাশ করে। আর যাদের নিকেলে অ্যালার্জি হয়, তারা এটি এড়িয়ে যাবেন। নিকেলের সঙ্গে অন্য কোনো জুয়েলারিতে অ্যালার্জি হলে এড়িয়ে যাবেন। অথবা ঈদের দিন নতুন করে না পরে আগে থেকে ট্রায়াল দিতে পারেন।
প্রশ্ন : জুতোর ক্ষেত্রে ত্বক সংস্পর্শে আসে। সেখানেও সমস্যা হতে পারে। কী কী ধরনের সমস্যা হতে পারে এ ক্ষেত্রে?
উত্তর : বর্ষা শেষ হলেও কিন্তু এর প্রভাব কিছুটা রয়ে গেছে। আর বর্ষায় যদিও আমরা সব সময় বলি ওপেন ফুটওয়ার বেছে নিতে, স্লিপার বা ফ্লিপফ্লপ পরতে, তবে এরপরও অনেকে বদ্ধ জুতা পরে। এতে আর্দ্রতা বেড়ে যায়। নানা ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয় এবং এর সঙ্গে হয় কনট্র্যাক্ট ডার্মাটাইটিস। জুতার ক্ষেত্রে ফ্যাশনেবল জুতা পরব। তবে যাদের সমস্যা রয়েছে তারা ফ্যাশনেবল মেডিকেটেড জুতা পরব।