শিরাপথের স্যালাইন কি শক্তির ওষুধ?
ইদানীং অযথা শিরাপথের স্যালাইন নেওয়ার প্রবণতা খেয়াল করা যায়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের লোকজনের মাঝে শিরাপথের স্যালাইন প্রীতি খুব বেশি। গ্রামের লোকজন মনে করেন, শিরাপথের স্যালাইন নিলে শরীরে ভালো থাকে, শক্তি ফিরে আসে।
স্যালাইন সম্পর্কিত এই তথ্যটি বিস্তারের জন্য দায়ী হচ্ছে, একশ্রেণির ভণ্ড হাতুড়ে চিকিৎসক। তারা অশিক্ষিত লোকজনের কাছ থেকে স্যালাইন দেওয়ার নামে স্যালাইনের চড়া দামসহ আরো কিছু পয়সাকড়ি হাতিয়ে নিচ্ছে। সেই সঙ্গে তাদের বুঝিয়ে দিচ্ছে যে স্যালাইন নিলে শক্তি বাড়ে। ক্রমান্বয়ে এ ধারণা অশিক্ষিত লোকজনের ভেতর বদ্ধমূল হয়েছে।
এই ভ্রান্ত ধারণা যে শুধু গ্রামেই প্রচলিত, তা কিন্তু নয়। শহরের শিক্ষিত মানুষেরও রয়েছে একই ভ্রান্ত ধারণা।
স্যালাইন বেশ কয়েকরকমের হয়ে থাকে। রকমভেদে এগুলোর মধ্যে উপাদানের ভিন্নতা রয়েছে।
প্রকৃত সত্য হচ্ছে শিরাপথের যে স্যালাইন দেওয়া হয় তাতে থাকে বিশুদ্ধ পানি, চিনি, লবণ ও অন্যন্য ইলেকট্রোলাইট। একজন সুস্থ স্বাভাবিক লোক শিরাপথের স্যালাইন গ্রহণের পর পানি, চিনি ও লবণের কারণে কিছুটা সজিবতা অনুভব করে। কিন্তু কিছু সময় পরে সেটি ক্রমশ আবার মিইয়ে যেতে থাকে। একই রকম সজীব অনুভূতি এক গ্লাস চিনির শরবত কিংবা এক গ্লাস ওরাল স্যালাইন মুখে গ্রহণ করলেও হতে পারে। তবে শিরাপথের স্যালাইন সরাসরি রক্তে পৌঁছে যায় বলে এর কার্যকারিতা অত্যন্ত দ্রুত। তবে স্যালাইন শক্তির ওষুধ নয়। একজন সুস্থ স্বাভাবিক ব্যক্তি যদি শিরাপথে স্যালাইন গ্রহণের মাধ্যমে শক্তি অর্জনের কথা ভাবেন, তবে তিনি ভুল করবেন। স্যালাইন শিরাপথে নেওয়ার কিছু নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনা মেনে শিরাপথে স্যালাইন দিতে হয়।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।